অতিথি পাখির আগমনে সখীপুরের শাল-গজারির বন মুখরীত

Spread the love

জুয়েল রানা, সখীপুর প্রতিনিধি ঃ দুয়ারে কড়া নাড়ছে শীত। শীতের আগমনে, আগমন ঘটেছে অতিথি পাখির। কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। গাছে গাছে আশ্রয় নিয়েছে অতিথি পাখি। প্রকৃতিতে লেগেছে নান্দনিক ছোঁয়া। এ যেন অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্য। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বোয়ালী, নলুয়া, যাদবপুর, লাঙঙ্গুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় যেন পাখিদের মেলা বসেছে। কিছু পাখি কুয়াশায় ভেজা পালকে নানা কায়দায় কসরত করছে। কিছু পাখি লেজ দুলিয়ে পোকা খুঁটে খাচ্ছে। ১০-১২ প্রজাতির অতিথি পাখি এসেছে।

তাছাড়া সাদা বক, কানি বক, পানকৌড়ি, চিল, বাজসহ দেশীয় প্রজাতির নানা পাখিও রয়েছে। ভোরবেলা ও সন্ধ্যায় এসব পাখি গাছে গাছে উড়ে বেড়াবার দৃশ্য ও পাখির কিচির মিচির শব্দ মোহিত করে তুলেছে। বিচিত্র পাখ-পাখালির মধুময় কলতানে প্রতিদিন মুখরিত হয়ে উঠছে এখানকার জনপদ। বছর জুড়ে হরেক রকম দেশিয় পাখির সমাবেশে সরব থাকলেও, শীতে যেন নতুন প্রাণ পায় এসব অঞ্চলের পাখিরা। এদের সঙ্গে যোগ দেয় পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত অতিথি পাখির দল। প্রচন্ড শীত আর খাদ্য সংকটে অস্তিত্ব রক্ষায় হাজার মাইল পথ অতিক্রম করে ছুটে আসে বাংলাদেশের মতো কম শীত প্রধান দেশগুলোতে।

পাখি প্রেমিকরা বলছে, প্রতি বছর নভেম্বর মাসে হিমালয়ের উত্তরে অবস্থিত শীত প্রধান দেশ সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, হিমালয় অঞ্চলের প্রচন্ডশীত ও ভারি তুষার পাতে টিকতে না পেরে পরিযায়ী পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে নাতিশীতোষ্ণ প্রধান অঞ্চলগুলোতে চলে আসে। বাংলাদেশেও প্রতি বছর অসংখ্য প্রজাতির পাখির আগমন ঘটে। শীতের রেশ কেটে গেলেই বসন্তের সময়টাতে এসব পরিযায়ী পাখি আবারও তাদের চিরচেনা ভূমিতে ফিরে যায়। তরুণ কবি শাহাদাত আজিজ বলেন, প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতীক পাখি। সকাল-সন্ধ্যায় কিচির মিচির শব্দে জেগে ওঠে গ্রাম-শহর।

পাখিদের দখলে পুরো আকাশ যে কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করে। গাছে গাছে শোভা পায় হরেক রকম পাখি। প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য মনোমুগ্ধ কর দৃশ্য। এ জন্যই গাছ, পাখি, প্রকৃতি মিলে একাকার আমাদের এই জন্মভূমি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রজন্মের আপাদমস্তকে শোভা পাক বসবাস যোগ্য একটি রাষ্ট্র, জাতি, দেশ। তাই অতিথি পাখিদের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। নলুয়া গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দ, ডানা ঝাপটানো, গাছের এক ডাল থেকে অন্য ডালে উড়ে যাওয়া যেন প্রকৃতিতে একে বারে হারিয়ে যাওয়া। প্রকৃতির এ দৃশ্য যারা দেখেননি তারা বুঝবেনা এর আনন্দ। পাখিদের অবিরাম খুনসুটি, ডানাঝাপটে দল বেঁধে উড়ে চলা দেখতে দেখতে কখন যে সন্ধ্যা নামেতা টেরই পাওয়া যায়না। নানা রঙের অতিথি পাখির মেলা বসেছে এ অঞ্চলে শাল-গজারিসহ বিভিন্ন গাছে গাছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, বোয়ালী গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় অতিথি পাখি এসেছে। এদের যাতে কেউ শিকার বা ক্ষতি করতে না পারে এজন্য আমি স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি এবং সচেতন করে যাচ্ছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, শীতের শুরুতে এ এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় অতিথি পাখির আগমন শুরু হয়েছে। কেউ অতিথি পাখি নিধন করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।