অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিপ তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজা তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর রিমান্ড শুনানিতে তার আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী মারধরের শিকার হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন—আদালতে শুনানি চলাকালে অন্য আইনজীবীরা তাকে পিটিয়ে আদালত থেকে বের করে দেন। পিটুনির শিকার হয়ে স্বপন রায় চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এর বিচার চাই, আদালত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, এখানে ন্যায়বিচার নেই।”
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালতে এই ঘটনা ঘটে, যেখানে আমির হোসেন আমুর রিমান্ড শুনানি চলছিল।
শুনানি চলাকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আমির হোসেন আমুর রিমান্ডের পক্ষে বক্তব্য দেন। এ সময় আমুর আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী পিপির বক্তব্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মন্তব্য করেন। এই মন্তব্যের পর উত্তেজিত হয়ে আদালতে উপস্থিত অন্য আইনজীবীরা তাকে মারধর শুরু করেন। মারধরের পর স্বপন রায় চৌধুরী আদালতের দরজার সামনে পড়ে যান এবং একপর্যায়ে তাকে লাথি মারা হয়। পরে কয়েকজন আইনজীবী তাকে ধরে আদালত থেকে বের করে দেন।
অভিযোগ করে স্বপন রায় চৌধুরী বলেন, “আমাকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আদালত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি এর বিচার চাই।”
এদিকে, রিমান্ড শুনানির সময় পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, “আমু শেখ হাসিনার বাপকে বিপথে নিয়েছিলেন, সে ভাবেই শেখ হাসিনাকে বিপথে নিয়ে গেছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। ১৪ দল নিয়ে মিটিং করে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, যেকোনো মূল্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমাতে হবে। তারা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। আমরা চাই বাংলাদেশে আর কোনো শেখ হাসিনা বা ফ্যাসিস্ট তৈরি না হোক। আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই।”
আইনজীবীদের হট্টগোলের মধ্যে আমির হোসেন আমু বলেন, “আইনজীবীরা ভাই ভাই, মিলেমিশে থাকা উচিত। এখনকার পরিবেশ কিন্তু সবসময় থাকবে না।” এ সময় উত্তেজিত হয়ে ওঠেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এরপর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর আদালত আমির হোসেন আমুর ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
এর আগে, ৬ নভেম্বর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমির হোসেন আমুকে গ্রেফতার করে।