টাঙ্গাইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত

Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার :

ঈদ উল আযহার ঈদ পূর্নমিলনী উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা প্রতিযোগিতা। এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝেও ছিল উৎসবের আমেজ। লাঠি খেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন নানা বয়সের নারী-পুরুষ।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ঝাওয়াইল খেলার মাঠে এ লাঠি খেলা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। খেলাটির আয়োজন করে ঝাওয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। এদিকে লাঠি খেলাকে কেন্দ্র করে সেখানে বসে এক গ্রামীণ মেলা।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোপালপুর-ভূঞাপুর আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ওরফে ঠান্ডু। 

ঝাওয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহজাহান আলীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন গোপালপুর পৌরসভার মেয়র রকিবুল হক ছানা, সেন্ট্রাল ইন্সুইরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের  উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আয়েশা সিদ্দিকা লাকী, গোপালপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আক্তার মুক্তা, ঝাওয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তালুকদার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ।

লাঠি খেলা দেখতে আসা ৭২ বছরের বৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, একসময় লাঠি খেলা ছিল মানুষের কাছে জনপ্রিয় খেলা। গ্রামের সাধারণ মানুষের বিনোদনের একমাত্র উৎস ছিলো এ লাঠি খেলা। ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি বৈশাখী মেলা, বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মানুষকে আনন্দ দিতে আয়োজন করা হতো। কিন্তু এখন এই খেলা আর দেখা যায় না। অনেকদিন পর সেই ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা দেখতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে। 

প্রথমবারের মতো এ খেলা দেখতে এসে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র বাপ্পি হোসেন বলেন, এ ধরনের খেলা আগে আমি কখনো দেখেনি। লাঠি নিয়ে একে ওপরের লাঠির ওপর মারছে খুব ভাল লাগছে।

লাঠিয়াল নেতা শহিদালি মিয়া বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন জোগাতে আমরা লাঠি খেলা দেখাই। ১০-১৫ বছর ধরে এ লাঠি খেলা দেখিয়ে আসছি। তাদের আনন্দে আমরাও আনন্দিত হই। 

আরেক লাঠিয়াল স্বপন আলী বলেন, এটা শুধু খেলা নয়। এ খেলার মাধ্যমে আত্মরক্ষার কৌশলও শেখা যায়। অনেক সময় বিপদের সম্মুখীন হলে, খালি হাতেও বেঁচে আসা সম্ভব। তাছাড়াও শারীরিক কসরতে এ খেলাটি একটি অন্যতম ব্যায়াম।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ওরফে ঠান্ডু বলেন, গ্রামীন খেলাধুলা কমে যাওয়ায় যুব সমাজ মাদকের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। তাই যুব সমাজকে মাদকের পথ থেকে দূরে রাখতে এ ধরনের আয়োজন করা প্রয়োজন।  গ্রামীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই প্রতি বছরই এ ধরেনর আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

আয়োজক কমিটি বলেন, প্রতিবছর আমরা গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য এই লাঠি খেলার আয়োজন করেছি। এ লাঠি খেলা দেখতে আমাদের এলাকা ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে প্রায় হাজারো মানুষ আসে। এসময় আনন্দ বিনোদন তৈরি হয়। আমরা এই লাঠি খেলার আয়োজন প্রতিবছর করবো।