তত্ত্বাবধায়ক সরকারে আগ্রহ নেই ইইউ প্রতিনিধি দলের, দেখতে চায় সুষ্ঠু নির্বাচন

Spread the love

যুগধারা ডেস্ক :
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) গুলশানে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ)-এর সঙ্গে বৈঠকে তারা এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ মূল্যায়ন করতে আসা ৬ সদস্যের নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল।

বৈঠক শেষে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান।

সকালে রাজধানীর গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাসে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের ৫ সদস্যের একটি দল অংশ নেয়।

বৈঠকের পর ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী জানান, বৈঠকে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এছাড়া আগের নির্বাচনগুলো সম্পর্কেও জানতে চেয়েছে তারা।

আবেদ আলী বলেন, বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধিদল গত নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছে। আগামী নির্বাচন কেমন হবে সেটিও জানতে চেয়েছেন। যেহেতু বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে আমরা কাজ করছি, তারা আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছেন। আমরা উনাদের সামনে সম্প্রতি পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের যে পরিস্থিতি দেখেছি, সেটি তুলে ধরেছি। নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা, সরকারের যে সহযোগিতা সেটি উনাদের সামনে আমরা তুলে ধরেছি। উনারা আমাদের কথা নোট করেছেন। ওনারা প্রত্যাশা করেন, বাংলাদেশের সব কয়টি রাজনৈতিক দল আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান বলেন, তারা ২০১৮, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ সবগুলো নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা উনাদের সামনে সবগুলো নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরেছি।

তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে কোনো কথা বলেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংবিধানে নেই এমন কোনো কথা তারা বলেননি। তত্ত্বাবধায়ক বিষয়ে তারা কিছু জানতে চাননি। এটার বিষয়ে উনারা কোনো আগ্রহ প্রকাশ করেননি।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবেন সেটি তারা নিশ্চিত করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনারা কনফার্ম করেননি। তবে উনাদের যারা সিনিয়র আছেন, তাদের সার্বিক বিষয়ে জানাবেন।

এ সময় ফোরামের উপদেষ্টা ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ ও নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ইইউর নির্বাচনসংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধানী দলটি গত রোববার ভোরে ১৬ দিনের সফরে ঢাকায় আসে।

পর্যবেক্ষক দলটি সেদিনই তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিক ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর সঙ্গে আলাদা একাধিক বৈঠক করে।

পরদিন সোমবার সচিবালয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। একইদিন মানবাধিকার কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পর্যবেক্ষক দলটি। দুপুরে পুলিশ সদর দফতর বৈঠক করেন তারা।

আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করার কথা রয়েছে প্রতিনিধি দলটির। এই সময়ে তারা সরকার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, নিরাপত্তা কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে বৈঠক করবে।

আগামী ১৫ জুলাই বিকেলে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দলটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এদিন আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকে বসবে সফররত দলটি। তাদের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতেই নির্ধারণ হবে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না।