ধনবাড়ী প্রতিনিধি ঃ ভালো ফলন আর বাজারে ভালো দাম থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে এ বছর কৃষকরা ধানে লাভবান হতে পারবেন এ আশা পোষণ করছেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার কৃষকরা। উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের পাশাপাশি দেশীয় স্থানীয় জাতের ধানও আবাদ করা হয়েছে। ধানের গাছ বা খড়ও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। সোনালী ধানের মৌ মৌ গন্ধ ছড়াচ্ছে চারদিক। ধান কাটা আর মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষকরা। তাঁদের স্বস্তি ফিরে এসেছে, দুই ফসলি জমিতে চাষ হচ্ছে তিন ফসল। উপজেলা কৃষি বিভাগের পাওয়া তথ্য মতে, উচ্চ ফলনশীল জাতের পাশাপাশি স্থানীয় জাতের ধানসহ ১০ হাজার ১’শত ৫০ হেক্টর জমিতে এই মৌসুমে ধান চাষ হয়েছে। কৃষকদের ক্ষতি পোষাতে সরকারি প্রণোদনার পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে কৃষকদের বিভিন্ন কলাকৌলশলসহ দেয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো হয়েছে ফলন।
সরেজমিনে গতকাল উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা ধান কাটা আর মাড়াইয়ে ব্যস্ত। হার্ভেস্টার ও শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে মাড়াই হচ্ছে। বেশির ভাগ জমিতে চাষ হয়েছে উন্নত জাতের ধান। উপজেলার নিম্ন অঞ্চল মুশুদ্দি, বলিভদ্র, বীরতারা ও পাইস্কাতেও হয়েছে ধানের বাম্পার ফলন। বিঘা প্রতি উৎপাদন হয়েছে গড়ে ২১ থেকে ২৪ মণ। উপজেলা জুড়ে গবাদি পশু পালন বাড়ায় প্রতি বিঘা ধানের খড় বিক্রি হচ্ছে চার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায়। এছাড়াও দেখা গেছে যে সকল কৃষকরা ইতিমধ্যে ধান কাটা শেষ করেছেন তাঁরা শীতকালীন স্বল্প আয়ূকালের ফসল ও সবজি লাগাতে জমি প্রস্তুত করছেন। আবার কেউ শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজি বাজারে বিক্রি করছেন চড়া দামে। উপজেলার মুশুদ্দির ইউনিয়নের ঝোপনা পূর্ব পাড়া গ্রামের কৃষক মো. আরিফুর রহমানের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, ‘আমি ব্রি ধান ৯৫ জাতের ধান আবাদ করেছি। অন্য জাতের তুলনায় বিঘা প্রতি ৩ মণ ধান বেশি হচ্ছে। এ জাতটি বিঘায় ২৬ মণ পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। উপজেলায় পাইস্কা ইউনিয়নে দরিচন্দবাড়ী গ্রামের কৃষক মো. ওয়াহেজ আলী বলেন, ‘এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে বাজারে দামও ভালো। জমি থেকেই খড় অগ্রিম টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষি অফিসের পরাপর্শে দুই ফসলি জমিতে তিন ফসল আবাদ করেছি। প্রায় কৃষকই তিন ফসল আবাদে ব্যস্ত। এতে কৃষকরা আরও লাভের মুখ দেখছেন।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা মাঠে যেয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। যে সকল জমিতে তিন ফসল আবাদ করা যায় তাদের আগ্রহী করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হচ্ছে।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এবার ধানের ভাল ফলন হয়েছে। কৃষকরা তিন ফসল আবাদে আগ্রহী। কোন ফসল কখন আবাদ করতে হবে তাদের জানাচ্ছি। ইতিমধ্যে উপজেলায় ৪ হাজার ১৭০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূলে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।’