বঙ্গভবনের বাইরে যেভাবে দিন কাটল আবদুল হামিদের

Spread the love

যুগধারা ডেস্ক :

দীর্ঘ এক দশক বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালন শেষে গত সোমবার বঙ্গভবন ছেড়েছেন মোঃ আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের পুরো সময়টা কাটিয়েছেন বঙ্গভবনে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে।

সোমবার বঙ্গভবন থেকে রাজসিক বিদায় নেওয়ার পর আবদুল হামিদ গতকাল মঙ্গলবার খুব সাধারণ মানুষের মতো সাদামাটা দিন কাটিয়েছেন।

দীর্ঘদিন বঙ্গভবনে কড়া নিরাপত্তা বলয়ে অভ্যস্ত জীবন থেকে বের হয়ে সেদিনই সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রপতি রাজধানীর নিকুঞ্জে তার নিজস্ব বাসায় রাত কাটান। এরপর মঙ্গলবার সারা দিন স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে খোশগল্প, আগত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, সকালের নাশতা, চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ, দুপুরের খাবার শেষে বিশ্রামও করেন তিনি।

জানা গেছে, বঙ্গভবন থেকে বিদায়ের পর তিনি কড়া নিরাপত্তায় নিকুঞ্জের প্রেসিডেন্ট লজে এসে ওঠেন। এ সময় সঙ্গে আসেন মন্ত্রী, এমপি, আওয়ামী লীগের নেতা ও আত্মীয়স্বজনরা। আগত অতিথি ছাড়াও ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিদের সঙ্গে গল্প-আড্ডায় মেতে ওঠেন সোমবার সারা দুপুর। বিকেলে খাবার শেষেও চলতে থাকে স্বাভাবিক জীবনের স্বাদ গ্রহণের আড্ডা। রাত ২টা পর্যন্ত চলে সে আড্ডা ও গল্প। ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিরা চলে গেলে পত্নী রাশিদা খানমসহ সামান্য ভাত, মাংস ও সবজিযোগে আহার গ্রহণ করে শুয়ে পরেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।

গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকায় গতকাল মঙ্গলবার সকালটা একটু দেরিতে শুরু হয় তার। সকালের নাশতা করেন ১১টার কিছু পরে। পরিচিত চিকিৎসক এসে স্বাস্থ্যও পরীক্ষা করে গেছেন। বিদায়ের ধকল সামলে সাবেক রাষ্ট্রপতি স্বাভাবিক ও ভালো আছেন বলেও চিকিৎসক জানিয়েছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

আগত অতিথি ও আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে দুপুরের খাবার খান বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। এরপর বিশ্রামে যান নিজের কক্ষে। ততক্ষণে বাসায় এসে উপস্থিত হন তার মেয়ে, জামাতা, নাতি-নাতনিসহ এলাকার মানুষজন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের গলদঘর্ম হতে হয়। কেউ সাবেক রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ভবনের উপরে যাচ্ছেন, কেউবা রাষ্ট্রপতি বিশ্রামে আছেন শুনে ফিরে যাচ্ছেন পরের দিন সাক্ষাতের আশ্বাসে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্রাম শেষে নাশতা সেরে নাতি-নাতনি এবং ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পরেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। এরই মাঝে অপেক্ষারত অতিথিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি।

সাবেক রাষ্ট্রপতির ছোট ভাই অধ্যক্ষ আব্দুল হক নূরু বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ স্বাভাবিক ও সুস্থ আছেন। তিনি পরিবারের সদস্য, অতিথি ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে খোশগল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। আহার-নিদ্রায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও তিনি অত্যন্ত আনন্দিত, হাসি-ঠাট্টায় সময় কাটাচ্ছেন।

গত সোমবার স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গভবনের ৫২ বছরের ইতিহাসে প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে আবদুল হামিদের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রাচারে বিদায় অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করে দেশবাসী।

তিনি বিভিন্ন মেয়াদে ১০ বছর ৪১ দিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বঙ্গভবন থেকে প্রস্থান করেন। এর আগে ওইদিন সকাল ১১টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে একই মঞ্চে আবদুল হামিদের উপস্থিতিতে শপথ নেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। প্রথা অনুযায়ী শপথ অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতিকে চেয়ারে বসিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি।

যুগধারা ডট টিভি/অন্তু