মধুপুর প্রতিনিধি ঃ টাঙ্গাইলের মধুপুরে সৌখিন গাছ চাষ করে সফল হয়েছেন মো.আব্বাস আলী নামের এক কৃষক। তিনি উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের টিকরী গ্রামের মৃত লাল মাহমুদের ছেলে। শহরের বাসাবাড়ি ও রাস্তার সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য রাবিশপাম,ইরিকা পাম,সাইকেস পাম ও সৌখিন বাঁশ এর চারা উৎপাদন করছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিংগাপুর ও বাহরাইনসহ বাংলাদেশের ঢাকা,চট্রগাম,সিলেট,বাজশাহীর বিভিন্ন শহরের বড় বড় বাসাবাড়ির সিঁড়ি ও বারান্দায় এবং পার্কের রাস্তায় লাগানো হয় এসব সৌখিন গাছ। শহুরে জীবনযাত্রায় ইট-সিমেন্টের সান্নিধ্য বড্ড বেশি। গাছপালা বা নিসর্গের সান্নিধ্য দিন দিন যেন দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে। আজকাল ছুটির দিন বা বড় অবকাশ ছাড়া শহর ছাড়িয়ে প্রকৃতির সংস্পর্শে যাওয়ার সুযোগ কোথায়? তাই চার দেয়ালের মধ্যেই যদি রাখা যায় জীবন্ত উদ্ভিদ, তাতে গৃহসজ্জায় নান্দনিকতার পাশাপাশি প্রশান্ত এক পরিবেশও তৈরি হয়। ছায়াপ্রেমী সজীব উদ্ভিদ দিয়ে বাড়ির আঙিনা, ছাদ ও বারান্দায় টবের মতো ঘরের ভেতরটাও সাজানো হয়। গৃহসজ্জয় সৌখিন গাছের (ইনডোর প্ল্যান্টস) মধ্যে আইভি লতা, পাতাবাহার, মানি প্ল্যান্ট, ফাইলো ডেনড্রন, ড্রাসেনা, ক্রোটন, বাহারি কচু, পাম, অ্যানথুরিয়াম, ডাইফেনবেকিয়া, ম্যারান্টা, মনস্টেরা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এগুলোর প্রতিটির মধ্যে আবার নানা বৈচিত্র্যও আছে। ছোট একএকটি চারা বিক্রি হয় ১৫০ টাকা থেকে ২শ ৫০ টাকায়। টবে ভরে এক ছোবা গাছ বিক্রি করে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। আব্বাসের রড় ভাই আনিস ২৫-৩০ বছর যাবৎ এ ব্যবসার সাথে জড়িত। তিনি এ ব্যবসায় অনেটা সফল হয়েছেন। এ ব্যবসায় লাভবান হয়ে তিনি ঢাকায় জমি কিনে বাসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বড় ভাইয়ের পরামর্শে আব্বাস আলী সৌদি আরব কয়েক বছর থাকার পর দেশেফিরে রাবিশপাম চারা উৎপাদনের কাজে লেগে যান। সৌখিন গাছের চারা উৎপাদন ও বিক্রি করে ইতোমধ্যে এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট মেয়ে বিকে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিবেন। প্রতিদিন আব্বস আলী সাথে থেকে কর্মচারী দিয়ে বাগানের পরিচর্যা করান। শখের বাগানে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন তার সহধর্মিনী মোছা.মর্জিনা বেগম। উপজেলার চাপড়ি-মধুপুর সড়কের টিকরী নামক স্থানের রাস্তার দু’পাশ এর জমিতে শোভা পাচ্ছে আব্বাস আলী ও আনিসের এসব সৌখিন গাছের চারা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা মধুপুরে আসেন রাবিশপাম,ইরিকাপাম ও সাইকেসপাম চারা কেনার জন্য। ঢাকার বিশ্ব রোডের ৩শফিট এ তাদের ১০ লক্ষাধিক টাকার নার্সাসীও রয়েছে। চাপড়ি বাজারের অটোরিক্সা-ভ্যান শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.সুমন সরকার বলেন, সৌখিন গাছের চারা উৎপাদন ও বিক্রি খুবই লাভজনক ব্যবসা। মো.আব্বাস আলী জানান,ধান ও সবজি চাষ ছেড়ে দিয়ে আমি সৌখিন গাছের বাগান করেছি। তিনি জানন, সৌদি আরবের থেকে আমি যে টাকা দেশে পাঠাতে পারতাম তার চেয়ে বেশি আয় হচ্ছে এই ব্যবসা করে। শহরের মানুষ এসব গাছের ক্রেতা।