স্টাফ রিপোর্টার :
এপ্রিলে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই মাসটিকে ‘ঈদের মাস’ অভিহিত করে দেয়া এক প্রতিবেদনে সেভ দ্য রোড জানিয়েছে, এই মাসে ২ হাজার ৫০৬টি ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহত হয়েছেন ৪৫১ জন এবং আহত ২ হাজার ৫২৭ জন।
রোববার (৩০ এপ্রিল) সেভ দ্য রোড-এর মহাসচিব শান্তা ফারজানার পাঠানো এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, এবার ঈদের ছুটিতে পদ্মা সেতুসহ সড়ক-মহাসড়কে মোটরবাইক দুর্ঘটনা গত মার্চ মাসের চেয়ে ৫৫.৫৩ শতাংশ কম ছিল। আহত ও নিহতের সংখ্যাও ছিল অর্ধেকের চেয়ে কম।
সেভ দ্য রোড-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৪৩১টি মোটরবাইক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪৩৫ জন এবং নিহত ৩৪ জন। এছাড়া ৬৪৫টি ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত ৩৬৮ এবং নিহত হয়েছেন ৪৩ জন; ৮০৮টি বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৯৪৩ জন এবং নিহত ২৮২ জন। সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ বাহন নসিমন-করিমন এবং অন্যান্য তিন চাকার বিভিন্ন ধরনের বাহনে ৬২২টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭৮১ জন এবং নিহত ৮৯ জন।
সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানা ও লায়ন ইমাম হোসেনের তত্ত্বাবধানে ২২টি জাতীয় দৈনিক, ২০ টিভি চ্যানেল, ৮৮টি নিউজ পোর্টাল এবং স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের দেয়া তথ্যানুসারে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সেভ দ্য রোড প্রতিবেদনে আরো জানায়, এবার বিভিন্ন স্থানে পরিবহন ভাড়া দুই থেকে তিনগুণ বেশি আদায় করার কারণে যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। কিন্তু বিআরটিএ বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কোনো মনিটরিং টিম ছিল না এসব দেখার।
সংগঠনটি বরাবরের মতো এবারো সাত দফা দাবি তুলে ধরে তাদের প্রতিবেদনে।
সেগুলো হলো – ১. মিরেরসরাই ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করতে হবে। ২. ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দিতে হবে। ৩. সড়কপথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতীত চালক-সহযোগী নিয়োগ ও হেলপার দ্বারা পরিবহন চালানো বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ৪. স্থল-নৌ-রেল ও আকাশ পথ দুর্ঘটনায় নিহতদের কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ সরকারিভাবে দিতে হবে। ৫. ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬. পথ দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা ত্বরান্বিতকরণের মধ্য দিয়ে সতর্কতা তৈরি করতে হবে এবং ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের পূর্ব পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা, সহমর্মিতা, সচেতনতার পাশাপাশি সকল পথের চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সকল পরিবহন চালকের লাইসেন্স থাকতে হবে। ৭. ইউলুপ বৃদ্ধি, পথ-সেতুসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে ভাঙা পথ, ভাঙা সেতু আর ভাঙা কালভার্টের কারণে আর কোনো প্রাণহানি না ঘটে।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু