অন্তু দাস হৃদয় :
ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে ঘরমুখো মানুষের জন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক একটি গুরত্বপূর্ণ সড়ক। এ সব ছুটিতে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে এই মহাসড়কের যানজটে আটকে ভোগান্তি পোহাতে হয় ঘর মুখো মানুষের।
গত ঈদযাত্রায় ভোগান্তি পোহাতে না হলেও আসন্ন ঈদে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপসহ নানা কারণে যানজট হতে পারে বলে মনে করছেন চালক ও যাত্রীরা। তবে পুলিশ বলছে, গত ঈদের মতো স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেনের সড়ক। এ ছাড়াও দুই পাশে সার্ভিসলেন চালু আছে। আবার এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড় পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়ক সিঙ্গেল লেনের। চারলেনের গাড়ি দুই লেনে প্রবেশের সময় যানজটের সৃষ্টি হতো। যানজটের ভোগান্তি এড়াতে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড় পর্যন্ত চারলেনের কাজ চলমান রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ হাজার যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপার হয়। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে যানবাহনের পরিমান তিন গুণের অধিক বেড়ে যায়।
যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা জানান, আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে গরুবাহী ট্রাক, পিকআপ ও যাত্রীবাহী বাসের চাহিদা বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। সেই কারণে অনেক ফিটনেসবিহীন ও রেজিষ্ট্রেশনবিহীন যানবাহন সড়কে চলাচল করবে। বৃষ্টির কারণে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চালাতে পারবেন না চালকরা।
অন্যদিকে, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সড়কে কোনো গাড়ি বিকল হলে তা অপসারণ করার সময় যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। সিরাজগঞ্জ অংশে যানজট সৃষ্টি হয়ে সেতুর টোলপ্লাজা পর্যন্ত আসলে টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের পাশে পশুর হাট বসবে।
এ ছাড়া অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে চালকদের এলোমেলো গাড়ি চালানোসহ নানা কারণে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।
বগুড়া থেকে আসা বাসচালক আব্দুল বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন সড়কে বাস চালাই। ঈদের সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক যানজটের ভোগান্তির আরেক নাম। এক বছর আগেও এখানে যানজটে প্রায় ১৬ ঘণ্টা আটকা থেকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
কিন্তু গত ঈদে স্বস্তির ঈদযাত্রা হয়েছে। আসন্ন ঈদেও যানজট হতে পারে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বৃষ্টিতে ধীর গতি ও মহাসড়কে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে যানজট হতে পারে।
ট্রাকচালক লিটন বলেন, কোরবানির ঈদে ট্রাকের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এই সুযোগে অসাধু মালিকরা ফিটনেসবিহীন ট্রাক ও বাস সড়কে নামায়। এ সব ট্রাক বিকল হয়ে অনেক সময় যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, গত ঈদে যানজট না হওয়ার যেসব পরিকল্পনা করা হয়েছিলো, সেই অভিজ্ঞতা এই ঈদেও বাস্তবায়ন করা হবে। আশা করি এ ঈদেও যানজট হবে না। আমরা মাঠে সব সময় আছি এবং কাজ করছি।
তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন নিয়ে যে আমরা শুধু ঈদের আগে কাজ করি তা না। প্রতিনিয়ত এ সব যানবাহন নিয়ে আমরা কাজ করে থাকি। প্রতিনিয়ত ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন ডাম্পিং করা হচ্ছে। গত মে মাসে এরকম যানবাহনের বিরুদ্ধে ২৫ হাজার মামলা হয়েছে।
এ ছাড়াও অনেক গাড়ি আটক করা হয়েছে। এ সব ব্যবস্থার কারণে কিন্তু গত ঈদ এ যাবতকালের স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা হয়েছে।
যানজট ও নিরাপদ ঈদ আমরা উপহার দিতে পেরেছি। ফিটনেসবিহীন, রেজিষ্ট্রেশনবিহনী ও লাইসেন্সসহ নানা অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ ধারাবাহিকতা বর্তমানেও অব্যাহত আছে, আশা করছি এর সুফল এবারও পাবো।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু