গোপালপুর প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে অন্যের জমিতে জোর করে ধান কেটে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে আঃ সালাম পিন্টু বাহিনীর বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় জমির মালিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে কর্মরত মোঃ শাকিল মাহমুদসহ অন্তত ৫ জন মারাত্বকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
গত বুধবার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের মৌজা ডাকুরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সুবিচার চেয়ে আহত শাকিলের স্ত্রী সাদিকা পারভীন বাদি হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ কে আসামী করে গোপালপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেল হাজতে পাঠায়।
গ্রেফতারকৃতরা হল- মৌজা ডাকুরী গ্রামের আঃ মান্নানের ছেলে আঃ সালাম পিন্টু (২৫), একই এলাকার আঃ হামিদের ছেলে এমদাদুল হক (৩২), ভাদাই গ্রামের আঃ গফুরের ছেলে শুভ মিয়া (২১), জাকারিয়া (২৭) ও জাহিদুল ইসলাম (৩০)। পলাতক আসামীরা হল- গান্দাইল ডাকুরী গ্রামের মৃত জয়েন উদ্দিনের ছেলে আয়নাল হক, মৌজা ডাকুরী গ্রামের মৃত মিরুল্লা মুন্সির ছেলে আঃ গফুর ও তার ভাই আঃ হামিদ এবং হামিদের ছেলে শামছুল আলম।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝাওয়াইল ইউনিয়নের মৌজা ডাকুরী গ্রামে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৪০ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছে শাকিল মাহমুদ ও তার চাচাত ভাই আশরাফুল আলম। এ বছর ওই জমিতে ধান চাষ করে তারা। দীর্ঘদিন ধরেই জমিটি দখলের পায়তারা করে আসছে সালাম পিন্টু বাহিনী।
এ নিয়ে এলাকায় দফায় দফায় সালিশ করেও কোন সমাধান মেলেনি। গত বুধবার দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওই জমির ধান জোরপূর্বক কেটে জমি দখল করতে আসে একই এলাকার আঃ মান্নানের ছেলে আঃ সালাম পিন্টু। বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হয় মৃত মতিউর রহমান (পুলিশ) এর স্ত্রী সুফিয়া বেগম, ছেলে শাকিল মাহমুদ ও তার স্ত্রী মামলার বাদি সাদিকা পারভীন এবং শাকিলের সহধর ভাই শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাজেদা বেগম।
মৃত আমিনুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম জানান, সন্ত্রাসীরা শাকিল মাহমুদকে হত্যার লক্ষে দেশিয় রাম দা দিয়ে মাথায় কোপ দেয়। প্রাণ বাঁচাতে শাকিল মাথা সরালে কোপটি কপালের এক পাশ থেকে গাল পর্যন্ত ক্ষত করে। গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ক্ষতস্থানে ২৬টি সেলাই দেয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় শাকিলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঘাটাইল ক্যান্টনম্যান্ট হাসপাতাল (সিএমএসে) স্থানান্তর করেন। বাকিরা গোপলপুর উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
সাদিকা পারভীন জানান, সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পরিবারের সাবাইকে এলোপাথারী মারপিট করে। এ সময় মৌজা ডাকুরী গ্রামের মৃত মিরুল্লা মুন্সির ছেলে হামলাকারী আঃ গফুর তাকে মেরে শ্লীলতাহানী করে ও গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও একটি স্মাট ফোন ছিনিয়ে নেয়।
তিনি আরো জানান, আসামী ও তাদের স্বজনরা মামলা উত্তোলনের জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করছে। মামলা না তুললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে।
গোপালপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, থানায় মামলা হওয়ার পর মুল আসামীসহ ৫জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্ট চলছে। এখন এলাকায় শান্তি বিরাজ করছে।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু