ছাত্র আন্দোলনে বুলেট বিদ্ধ ঘাটাইলের আরিফের বাঁচা মড়ার লড়াই 

Spread the love
ঘাটাইল প্রতিনিধি ঃ ছাত্র আন্দোলনে বুলেট বিদ্ধ ঘাটাইলের আরিফ হোসেন(২১)। বেঁচে থাকার লড়াই করে যাচ্ছে। তার শরীর পুলিশের গুলিতে ঝাঝরা।  ঢাকা মেডিকেলে  চিকিৎসা নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছে সে। দরিদ্র ঘরের সন্তান আরিফ হাসান  স্থানীয় ধলা পাড়া কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে। তার পিতা মৃত আবুল কাশেম। ঘাটাইল উপজেলার শালিয়াবহ গ্রামে তাদের বাড়ি।
১৯ জুলাই ঢাকার উত্তরায় বোনের বাসায় বেড়াতে যায় আরিফ। ২০ জুলাই বিকালে চা খাওয়ার জন্য বের হয়। এমন সময় উত্তরা ৭ নং সেক্টরের বিভিন্ন সড়ক দিয়ে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে এয়ারপোর্টের দিকে যাচ্ছিল।  আরিফ হোসেন তখন আন্দোলনকারীদের সাথে মিছিলে যোগ দেয়। মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা অতিক্রম করে আন্দোলনকারীরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আরিফ জানায় এ সময় তিনটি পুলিশের গাড়ি ঘটনাস্হলে আসে। ওই গাড়ি থেকে মুহুর্মুহু গুলি তাদের দিকে ছোড়া হয়। পুলিশের ছোড়া গুলিতে  তার পিঠ গুলিবিদ্ধ হয়ে তার বুকের পাঁজর ভেদ করে  হাতের ভিতর দিয়ে বের হয়ে যায়। আরিফ আরো জানায়, তখন আমি সড়কে লুটিয়ে পড়ি। সহযোদ্ধা বন্ধুরা আমাকে প্রথমে উত্তরায় ঢাকা স্পেশালাইস্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখান থেকে রাত বারোটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুলেটের গুলিতে খাদ্যনালী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সাত ঘন্টা অস্ত্র প্রচার করা হয়। কিন্তু পরে সমস্যা   দেখা দিলে দ্বিতীয় দফায় আরেকটি অপারেশন করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তার ফুসফুসে পচন ধরে এবং তাকে পুনরায়  অপারেশন করে ফুসফুসের অংশ কেটে ফেলা হয়। চিকিৎসা বাবদ তাদের দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আরিফ হোসেন ক্ষোভের সঙ্গে   জানায়, ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি থাকাকালীন তাদের পরিবারের সদস্য ছাড়া আর কেউ তাদের সঙ্গে দেখা করিনি। ২১ জুলাই থেকে ১০ই সেপ্টেম্বর সে  ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটাল এ ভর্তি ছিল। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে গ্রামে নিয়ে আসা হয় কিন্তু একদিন যেতে না যেতেই তার পেটে গ্যাস জমে আবার অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে আরিফ বাড়িতে থাকলেও সে শংকামুক্ত নয়। তাদের পরিবারের ছয় জন সদস্য। অসুস্থ কর্মহীন তাদের সংসার কিভাবে চলবে সেই চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে আরিফ। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি ছাড়া তার চলার কোন উপায় নেই।