ছেলের মুখ দেখার আকুতি পূরণ হলো না বিএনপি কর্মী বশিরের মায়ের

Spread the love

ঘাটাইল প্রতিনিধি ঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দত্তগ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের স্ত্রী হাছনা বেগম। স্বামী আব্দুল জলিল মারা গেছেন প্রায় ২৫ বছর আগে। একমাত্র সম্বল ছেলে বিএনপি কর্মী বশির আহম্মেদ পুলিশের করা নাশকতা মামলায় ১১ দিন যাবৎ জেলে। গ্রামবাসী ও হাছনার আত্মীয়দের দেয়া তথ্যমতে, হাছনার শরীরটা কিছুদিন যাবৎ ভালো যাচ্ছিল না।

গত (২২ নভেম্বর) ছেলে বশির জেলে যাওয়ার পর তার মায়ের শরীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। যে ছেলে মা’কে রেখে কোথাও গিয়ে রাত কাটাতেন না সেই ছেলে ১১ দিন ধরে জেলে। তাই সারাক্ষণ বৃদ্ধা মায়ের চোখের কোণে জল জমে থাকত। ছেলেকে শেষবারের মতো একবার দেখার আকুতি ছিল তার কিন্তু তা অপূর্ণই থেকে গেল। ছেলে জেলে থাকা অবস্থায় শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মারা যান মা’ হাছনা বেগম। মা ছেলেকে শেষ দেখা দেখতে না পারলেও মা’কে শেষ বিদায় জানাতে বশির প্যারোলে ৭ ঘণ্টা মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরেন।

পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে দুপুর দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মায়ের জানাজা ও দাফন কাজে অংশ নিতে প্যারোলে মুক্তি মেলে তার। বশিরের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে নিজাম উদ্দিন বলেন, ছোট বেলা থেকেই বিএনপির সমর্থক ছিল তার চাচা। মৃত্যুর আগে এক নজর ছেলের মুখটা দেখার আকুতি ছিল তার দাদীর। কিন্তু তার সে আশা পূরণ হলো না। চাচা বশিরের এক ছেলে ও এক মেয়েকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতেন তার দাদী।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বাদ আছর জানাজা শেষে তার দাদীকে স্থানীয় করস্থানে দাফন করা হয়েছে। উল্লেখ্য গত (২২ নভেম্বর) উপজেলার দিগড় ইউনিয়নের কাশতলা ভিটিপাড়া এলাকায় কর্মী সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে সভা পন্ড করে দেয় পুলিশ। পুলিশের দাবি তারা সাতটি ককটেল উদ্ধার করেন সভাস্থল থেকে। আটক করা হয় বশিরসহ ১০ নেতাকর্মীকে। পরে ওইদিন রাতেই থানার উপ-পরিদর্শক বিল্লাল হোসেন বাদি হয়ে ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনের নামে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন।

এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, মায়ের মৃত্যুর কারণে বশিরকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলে সঙ্গে থাকা জেলা পুলিশ তাকে নিয়ে পুনরায় জেলহাজতে প্রেরণ করবেন।