টাঙ্গাইলে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর জনসভায় হামলা; নিন্দার ঝড়

Spread the love

সুলতান কবির :

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তারেক শামস খান হিমুর জনসভায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

এ ছাড়াও টাঙ্গাইল ও দেলদুয়ার-নাগরপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা ঝড় বইছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকালে  দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ইউনিয়নের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্যোগে সিংহরাগী মুন্সিপাড়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে ঈদ পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় মোরতুজ আলী খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখছিলেন নাগরপুর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নাজমুল হক তপন। বক্তব্য চলাকালে এলাসিন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে রিফাত, কামরুলসহ  ১০/১২ জন মঞ্চস্থলে এসে সন্ত্রাসী কায়দায় প্লাষ্টিকের চেয়ার দিয়ে নাজমুল হক তপনের মাথা লক্ষ করে বাড়ি দেয়।

এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদের প্রতিহত করলে তারা সভাস্থল ত্যাগ করে।

ভুক্তভোগী নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নাজমুল হক তপন বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাগরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধভাবে সংসদ নির্বাচন করে এমপি মহদয়কে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করেছিলাম। নির্বাচনে জয়লাভ করার পর থেকেই এমপি মহদয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিমাতা সুলভ আচরন শুরু করে। প্রথমে তিনি উপজেলা নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী কুদরত-ই-এলাহীর কৌশলে বিরোধিতা করে তাকে পরাজিত করে।

তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকে গোপনে সহযোগীতা করেন। এ ছাড়াও তার বাহামভুক্ত লোক দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ডা. আব্দুল হাইয়ের বাসায় হামলা চালিয়ে তার ছেলে খালিদ হাসান ও ভাই মানিককে মারধর করে। পাকুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ওবায়দুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কহিনুর মিঞাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর উপর শাররীক নির্যাতন করে। আমি তার পাশবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ করি মাত্র।

তিনি আরও বলেন আমার নেতা, তারেক সামস খান হিমুর জনসভায় স্থানীয় এমপির বাহিনী দ্ধারা ওই নির্যাতনের স্বীকার ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করে বক্তব্যকালে এলাসীন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ভুমিদস্যু আনিসুরসহ দশ-বারজন যুবক এস সন্ত্রাসী কায়দায় চেয়ার দিয়ে আমার মাথা উপর বাড়ি মারে এবং পানির বোতল দিয়ে ডিল ছুঁড়ে।

এ সময় চেয়ারে বাড়ি লেগে আমার হাতে ক্ষত হয়। হামলার সময় সাংবাদিকরা ভিডিও ধারন করলে ওই সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। আমি এ ঘটনার সাংগঠনিকভাবে বিচার দাবি করছি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে এলাসীন ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আনিসুর রহমান জানান, আমরা বক্তব্য শুনতে গিয়েছিলাম। বক্তব্যে স্থানীয় এমপির সমালোচনা করে এক বক্তা বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় তাকে এ রকম বক্তব্য দিতে নিষেধ করেছি মাত্র। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী  তারেক শামস খান হিমু জানান, অদৃশ্য কারো ইঙ্গিতে আমার জনসভা পন্ড করার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়েছে। ইতোপুর্বেও আমার নির্বাচনী জনসভা বানচাল করার জন্য হামলা চালানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমি কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলার নেতাদের সাথে কথা বলে অভিযোগ করবো। হামলা করে আমাকে এবং আমার কর্মীদের ধমিয়ে রাখতে পারবেনা। তিনি এ হামলার পিছনে কে আছে তাকে খুজে বের করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানান।

এ বিষয়ে দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শিবলী সাদিক জানান, ঘটনাটি অত্যান্ত দুখঃজনক ও ন্যক্কারজনক। তিনি জেলা আওয়ামী যুবলীগের নিকট ওই ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্যে সুপারিশ করবে বলেও তিনি জানান

দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) নাছির উদ্দিন মৃধা জানান, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তারেক শামস হিমুর ঈদ পুর্নমিলনী সভায় হামলার বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপুর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ঘটনার সম্পর্কে টাঙ্গাইল -৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের সাংসদ  আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, গতকালের ঘটনায় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা হয়েছে দলীয় কোন অনুষ্টান ছিল না ওই দিন। কেউ ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে গিয়ে সরকার ও জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে কুরুচিপুর্ণ বক্তব্যে দিলে স্থানীয় যুবলীগ তা প্রতিহত করেন।