স্টাফ রিপোর্টার ঃ টাঙ্গাইল শহরের বেড়াডোমায় গত জুনে নির্মাণাধীন সেতু দেবে যাওয়ার ঘটনায় টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়রকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়াসহ তিন প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার মন্ত্রনালয়ের ওয়েব সাইটে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিটি দেওয়া হয়েছে।
গত ১৪ নভেম্বর দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস.এম সিরাজুল হক আলমগীরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব তাকে দিতে বলা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখার উপসচিব মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন রোববার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেয়র এস.এম সিরাজুল হক আলমগীর। দায়িত্ব অবহেলার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট দুইটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগগুলো হলো- পৌরসভার প্রকৌশলীদের সঙ্গে ঠিকাদারের পক্ষের স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম করেছে জেনেও ব্যবস্থা গ্রহণ না করা ও কাজের অগ্রগতির তুলনায় অতিরিক্ত বিল প্রদান করা। এছাড়াও টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীসহ তিন প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলীরা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব গুহ ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিন্নাতুল হক। এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অসদাচরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ নামা প্রাপ্তির ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তাদের লিখিত ভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।
বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্মানাধীন সেতুটির ঢালাই কাজের পূর্বে সেন্টারিং ও সাটারিং এর সময় ঠিকাদার ড্রয়িং ও ডিজাইন অনুসরণ না করে বল্লি ও বাঁশের খুটি ব্যবহার করেন। এ ব্যাপারে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলীরা শুধু চিঠির মাধ্যমে তাদের নিষেধ করেন। তারা ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ করার কোন ব্যবস্থা নেননি। বরং ঢালাইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন। এটিকে দায়িত্বে চরম অবহেলা প্রদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও সেতুটি নির্মানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান “ ব্রিকস্ অ্যান্ড বিল্ডিং লিমিটেড” এবং “দ্যা নির্মিতি কে (জেভি)” সেতু নির্মানে ডিজাইন ও প্রাক্কলন যথাযথ অনুসরণ না করায় ওই দুই প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সোমবার (২১ নভেম্বর) তিন প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া প্রসঙ্গে মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর জানান, তারা মন্ত্রানালয়ের ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছেন।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চিঠির জবাব দিবেন বলে জানান তিনি। এর আগে গত ১৬ জুন রাতে বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর উপর সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন সেতু দেবে যায়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মান করা হচ্ছিল। আট মিটার প্রস্ত ও ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা।“ ব্রিকস্ অ্যান্ড বিল্ডিং লিমিটেড” এবং “দ্যা নির্মিতি কে (জেভি)” নামক দুটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মান কাজ পেয়েছিলেন তবে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা।