স্টাফ রিপোর্টার :
আগামী (২১ জুন) টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র আব্দুর রহিম আহমেদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এনামুল করিম অটল ও কৃষক শ্রমিক জনতালীগের উপজেলা শাখার সভাপতি রাহাত হাসান টিপু মেয়র পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার ১০টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৪৩৭। এর মধ্যে নারী ভোটার ৯ হাজার ৫৩০ জন এবং পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৯০৭জন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট হয়ে উঠছে। আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ তারা গোপনে আব্দুর রহিম আহমেদের বিরোধীতা করছে। আব্দুর রহিম আহমেদ স্থানীয় সংসদ সংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের অনুসারী। তাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে এমপি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
এ কারণে এমপি বিরোধী গ্রুপ চায়না এমপির অনুসারী মেয়র পদে জয়লাভ করুক। তারা প্রকাশ্যে বিরোধীতা না করলেও গোপনে বিরোধীতা করছেন এবং নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছেন বলে জানান আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
এ ছাড়াও মেয়র হয়েও গত পাঁচ বছরে তিনি পৌরসভার তেমন কোন কাজ করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। রাস্তা ঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ গত পাঁচ বছরে পৌরসভার কোন উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
তবে এ সব বিষয় উড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুর রহিম আহমেদ বলেন, গত পাঁচ বছর মেয়র হয়ে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। দলের ভেতরে কোন দ্বন্দ নেই। শুধু আওয়ামী লীগই নয় দল মত নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাকে ভোট দিয়ে জয়জুক্ত করবে।
আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী ও পৌরসভার জনগণ একত্রিত হয়েছে। গত পৌরসভার নির্বাচনের ন্যায় এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নৌকা উপহার দিবে।
এ দিকে বাসাইল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অত্যন্ত দূর্বল। দলের ভেতরেও রয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। আওয়ামী লীগ সরকারের অধিনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলেও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল করিম অটল এবারও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তিনি গত মঙ্গলবার জেলা বিএনপির সভাপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন। তাঁর পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেছেনও বলে জানান জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহিন ।
তবে এনামুল করিম অটল বলেন, উপজেলা বিএনপির সকল নেতাকর্মী আমার সাথে রয়েছে। জীবন যৌবন শেষ করেছি এ দলের জন্য। বাসাইল কলেজের ভিপি ছিলাম। বিএনপির দুইবার উপজেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে বাসাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি।
তিনি আরও বলেন, গত পৌরসভা নির্বাচনে আমি মাত্র ১৯ ভোটে হেরে গেছি। বর্তমান সরকার আমাকে নীলনক্সা করে হারিয়েছে। এবার ৭০ ভাগ ভোটার আমার পক্ষে। জনগণ ভোট দিতে পারলে আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবো। এ অবস্থায় মাঠ ছেড়ে দিলে জনগণ আমাকে ক্ষমা করবে না। জনগণ আমার সাথে আছে। আমি শতভাগ আশাবাদী জয়ের ব্যাপারে ।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহিন বলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল করিম অটল দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। সে এখন দলের কেউ নন। বিএনপির কোন নেতাকর্মী তাঁর নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম তার মনেনাীত প্রার্থী উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি রাহাত হাসান টিপুকে জয়ী করার জন্য ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। সভা সমাবেশ করছেন।
কৃষক শ্রমিক জনতালীগের মেয়র প্রার্থী রাহাত হাসান টিপু বলেন, গত নির্বাচনে সামান্য ভোটে হেরেছিলাম। ১০ বছর ধরে মাঠে রয়েছি। বাসাইলের জনগণ আমাকে চায়। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত।
তবে সাধারণ ভোটাররা সন্ত্রাস, মাদক মুক্ত ও উন্নয়নশীল ও আধুনিক পৌরসভা গড়তে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়জুক্ত করবেন বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাসাইল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনি শংকর রায় বলেন, নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ব্যাপক সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু