বুধবার থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট

Spread the love

যুগধারা ডেস্ক :

সিলেট জেলায় বুধবার (১২ জুলাই) ভোর থেকে পরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির (পরিবহন ধর্মঘট) ডাক দিয়েছে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। সিলেট-তামাবিল সড়কে নির্বিঘ্নে বাস চলাচল করতে দেওয়া, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে এ কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ দুই দাবিতে দুদিন ধরে সিলেট-তামাবিল সড়কে কর্মবিরতি চলছে। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় বুধবার ভোর থেকে পুরো সিলেট জেলায় পরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে সব পরিবহন সংগঠন।

এ দিকে সোমবার ভোর থেকেই সিলেট-তামাবিল সড়কে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে গণপরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে।

স্থানীয়রা জানান, ওই সড়কে শুক্রবার রাতে বাসচাপায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জৈন্তাপুর উপজেলার ১৭ পরগনার সালিশ কমিটি বাসচালকদের লাইসেন্স ইস্যু সামনে এনে সড়কটিতে সাময়িকভাবে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়। ফলে রোববার সড়কটিতে চলাচল করা কয়েকটি বাস ও মিনিবাসের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ।

এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং কামাল আহমেদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা এ আন্দোলন করছে।

এ দিকে সোমবার এক জরুরি বৈঠক করেছে বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগনা সালিশ কমিটি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৭ পরগনার কাছে শ্রমিক নেতা মইনুল ইসলাম ও মালিক সমিতির প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমা চাওয়ার আগ পর্যন্ত উত্তর সিলেটে তামাবিল রোড, কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট রোডে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। মালিক সমিতি নিজেই গাড়ি বন্ধ করেছে, তাই ক্ষমা চাওয়ার পর পুনরায় বাস চালাতে চাইলে ১৭ পরগনার অনুমতি নিয়ে চালাতে হবে।

বাস ব্যতীত সব গাড়ি চলাচল করবে। যাদি চলাচলে কেউ বাধা দেয়, তাহলে ১৭ পরগনার জনসাধারণ তা প্রতিহত করবে।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ জানান, দরবস্ত বাজারে বাসচাপায় পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাস মালিক সমিতি বা এই রুটের পরিবহনের সঙ্গে জড়িত কেউ দুঃখ প্রকাশ করেনি। এমনকি আহত বা নিহতদের পরিবারের কোনো খোঁজখবরও নেয়নি তারা। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগণার সালিশ সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে অন্য যেকোনো যানবাহন স্বাভাবিকভাবেই চলবে।

আবু জাফর আবুল মৌলা চৌধুরী বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার ১৭ পরগনার বৈঠক বসবে। এতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বাস ও ইজিবাইকের (টমটম) সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। মূলত এর জের ধরেই পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে।