ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌরসভার অধিকাংশ বাসাবাড়িতে ঢুকছে বৃষ্টির পানি। তলিয়ে গেছে পৌরসভার প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ পাড়া-মল্লার রাস্তাঘাট ও নীচতলার ঘর।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে লাগাতার বৃষ্টি শুরু হলে ভোগান্তির মধ্যে পড়ে পৌরবাসী। হঠাৎ করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানি ঢুকে মালামাল ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকে।
এদিকে পানি নিষ্কাশনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। তারা জানায়, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে সব থেকে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন ৪ ও ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আকস্মিক পানিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালামাল ও বাসাবাড়ির আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।
পৌরসভার ঘটান্দী গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘একে তো পৌর কর্তৃপক্ষের নিম্নমানের ড্রেনেজব্যবস্থা, এর মধ্যে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ণ করা হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি। আমার ফ্রিজ ও অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।’
ফসলআন্দী গ্রামের বাবুল মিয়া বলেন, ‘ভূঞাপুর শহরের প্রধান জলাধারের যে খালটি ছিল, সেটি পৌরসভার ময়লা ফেলায় ভরাট হয়ে গেছে। এ ছাড়া নানা প্রতিষ্ঠান ও প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করে পুরো খালটি ভরাট করে ফেলেছে। এতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে শহরের প্রতিটি খালই দখল ও ভরাট হয়ে গেছে। সেগুলো উদ্ধারেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তাদের এ গাফিলতিতেই বাসার নিচতলা ডুবে গেছে। অনেক কিছু পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।’
ভূঞাপুর বাজারের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, ‘শহর থেকে পানি বের হওয়ার কোনো জায়গা নেই। তাই স্কুল ও কলেজের মাঠে পানি জমে দোকানে প্রবেশ করছে। এতে মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। এ রকম মাঝেমধ্যেই হয়। কিন্তু দেখার কেউই নেই।’
ঘাটান্দী উত্তরপাড়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পৌরসভার ৪ ও ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ট্যাক্স দিই। কিন্তু এই দুই ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট সারা বছর পানিতে তলিয়ে থাকে। আর বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির পানির সাথে ড্রেনের দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি ঘরে ঢোকে। আমরা এর প্রতিকার চাই।’
এসব বিষয়ে ভূঞাপুর পৌরসভার প্রকৌশলী সুকমল রায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।