মধুপুর প্রতিনিধি ঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশ অপেক্ষা করে মধুপুরের ফাজিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। ফি না নেওয়ার নিয়ম বা নির্দেশনা না থাকলেও প্রধান শিক্ষক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা না করে উপজেলা শিক্ষা অফিসের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ফি আদায় করেছে বলে বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
প্রায় দেড়-দুই বছর যাবৎ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ (এসএমসি)’র সভাপতি স্বাক্ষর না নিয়েই নিত্যনৈমিত্তিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের ফাজিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, মধুপুরের মির্জাবাড়ীর ইউনিয়নের ফাজিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় ফি না আদায় করার নির্দেশনা থাকলেও প্রধান শিক্ষক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে পরীক্ষার ফি আদায় করেছেন।
এ ব্যাপারে ফি না নেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। ফি না নেওয়ার এই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজের মনমর্জি শ্রেণি ভিত্তিক ফি আদায় করে পরীক্ষা নিচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের এসএমসি’র সভাপতি আলম সরকার। তিনি জানান, পঞ্চম শ্রেণিতে ৫০, চতুর্থ শ্রেণিতে ৪০, তৃতীয় শ্রেণিতে ৩০ টাকা, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২০ টাকা হারে ফি আদায় করেছে। এসএমসি’র আলম সরকার জানান, কোভিডকালীন সময় থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে জানিয়ে আসছে তার সভাপতির পদের মেয়াদ শেষ। তিনি জানান, দেড়-দুই বছর যাবৎ বিদ্যালয়ের কোন কাগজপত্রে তার স্বাক্ষর না নিয়েই সমস্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। স্লিপ কমিটির বরাদ্দকৃত টাকা তার স্বাক্ষর না নিয়েই উত্তোলন করেছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লিখিত অভিযোগ করেছে বলে তিনি জানান।
বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণি শিক্ষার্থী হিয়া মনিসহ একাধিক শিক্ষার্থী তাদের কøাসে ২০ টাকা করে ফি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে। মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম খান জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ বছর তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় ফি না নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। যদি এ বিদ্যালয়ে ফি নিয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সহকারী শিক্ষা অফিসার আনোয়ারুল হক ও জহিরুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফাজিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী জানান, ফি নেওয়ার কথা অস্বীকার করে জানান, করোনা টিকার অনলাইন আবেদন ও কার্ডের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা ইয়াসমীন জানান, এ বিষয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ পাননি। এ বিষয়টি শোনার পর মুঠোফোনে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলে তিনি জানান, বৃত্তি পরীক্ষার কারণে তদন্ত করতে বিলম্ব হয়েছে। তিনি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কে নির্দেশ দিয়েছেন।