মধুপুরে শীতের পিঠা বিক্রি জমে উঠেছে

Spread the love

হাবিবুর রহমান ঃ বাংলার প্রকৃতিতে চলছে শীতকাল। প্রাচীণ কাল থেকে অপরূপ বাংলায় শীতকালে চলে আসছে পিঠাপুলির নানা উৎসব। নবান্নে গ্রাম বাংলায় চলছে পিঠা পুলির নানা পর্ব। মাঠে মাঠে সোনালি ধানে ভরে গেছে ফসলের মাঠ। পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে। কৃষক গোলা ভরতে ব্যস্ত সময় পার করছে। বাড়ীর উঠোন আঙ্গিনা সোনা রঙের ধানে ভরে গেছে। কুয়াশা ভেজা রোদে ধান শুকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে গ্রাম্য বধূরা। কাক ডাকা ভোর থেকে ঢেঁকির শব্দে ঘুম ভাঙ্গে পল্লী গাঁয়ের। গ্রাম্য বধূরা মনের আনন্দে তৈরি করে নানা স্বাদের পিঠা। আত্মীয় স্বজনরা শীতের আমেজে ছুটে চলে স্বজনদের বাড়িতে।এ যেন পল্লীর চিরায়ত ঐতিহ্য। সরিষা দোপাটি নানা সবজিতে মেঠো পথে সেজেছে। এ দৃশ্য ছিল গ্রাম বাংলার।

আধুনিক জীবন যাপন, কর্মমূখী ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় এ দৃশ্য অনেকটা কমে গেছে। মধুপুরের হাট-বাজার পথ-ঘাটে পিঠাপুলিতে স্বাদ নিচ্ছে নবান্নের এ সময়ে নানা শ্রেনী পেশার মানুষ। শীতকালীন পিঠাপুলি বিক্রি জমে উঠেছে। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে পিঠা। শীতের আমেজে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পরিবার পরিজন নিয়ে বিকেলে থেকে রাত পর্যন্ত পিঠা খেতে দেখা যাচ্ছে হাটবাজারে।

ব্যস্ততার ফাঁকে বেড়ানো সময়ে স্বাদ নিচ্ছে শীতকালীন পিঠাপুলির। এ দৃশ্য যেন চেনা হয়ে উঠেছে। মধুপুরের শহরের মার্কেট এলাকা, থানা মোড়, শহীদ স্মৃতি রোড়, প্রেসক্লাব মোড়, সেগুনবাগান, চাড়ালজানী, কাঁঠালতলী, কল্লোল সিনেমা, মালাউড়ি, সিএমবি মোড়, টেকি পাড়া, বটতলা মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায় পিঠা বিক্রির ধুম। সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে খাচ্ছে পিঠা। অনেকে আবার বাড়ীতেও নিচ্ছে। মধুপুর প্রেসক্লাবের সামনে পিঠা বিক্রেতা মোখলেছ জানান, তিনি প্রতিদিন ১৭’শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করে। তিনি চিতই, ভাপা, চাপড়ী বিক্রি করেন।

প্রতিদিন তার খরচ বাদে ৭’শ থেকে ১ হাজার টাকা লাভ করে থাকে। তিনি আরো জানান, অনেকেই তার দোকান থেকে বাসা-বাড়ীতে পরিবার পরিজনের জন্য পিঠা কিনে নিয়ে যান। শীতে বেড়ে গেছে পিঠার চাহিদা। পিঠার চাহিদা বেশি হলে তিনি অনেক সময় হিমশিম খেয়ে যান। পিঠার ক্রেতা রনি জানান, তিনি ঝাল পিঠা ও ভাপা পিঠা নিতে এসেছেন। গতকাল তিনি কয়েকটি পিঠা সখ করে কিনে ছেলেমেয়েদের জন্য নিয়ে যান। আজ তার মা পিঠা নিতে বলছেন তাই তিনি এসেছেন। আব্দুল হালিম বাড়ীতে যাওয়া সময় প্রতিদিন বাচ্চাদের জন্য পিঠা নেন।

শুধু রনি, আব্দুল হালিমও নন এরকম অনেকেই বাড়ীতে ও পরিবার পরিজন নিয়ে এসে পিঠা খাচ্ছে। শীতের স্বাদ নিচ্ছে নবান্নের পিঠাপুলির। প্রতিটি পিঠা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা দামে। অনেকে আবার ঝাল পিঠা কেজি হিসাবেও বিক্রি করে থাকে। এভাবে মধুপুরের বিভিন্ন পথ-ঘাট-হাট বাজারে ধুম পড়েছে শীতের পিঠাপুলির।