স্টাফ রিপোর্টার : টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল সাহাপাড়া এলাকায় স্ত্রী এবং তার শশুরবাড়ীর লোকজনের বিরুদ্ধে হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন প্রতিবন্ধী স্বামী সুমন ঘোষ।
বিবরণে জানা যায়, দেলদুয়ার উপজেলার মৃত নারায়ন চন্দ্র ঘোষের ছেলে সুমন ঘোষ একজন প্রতিবন্ধী। তিনি সরকারি তালিকাভূক্ত প্রতিবন্ধি ভাতাভোগী। চৌদ্দ মাস পূর্বে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বেতকা এলাকায় দীনেশ চন্দ্র দাসের কন্যা শিল্পী রানী দাসের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সংসারে একমাত্র মা ও স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু বিয়ের ৬ মাস যেতে না যেতেই তার অর্থলিপ্সু স্ত্রী শিল্পী রানী দাস সীমাহীন অর্থ দাবী করেন। সুমন ঘোষ পেশায় একজন দিনমজুর। তাহার অনৈতিক চাহিদা মেটাতে প্রায় ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা ঋণী হয়ে যান। এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি তার অর্থলিপ্সু ও লোভী স্ত্রীকে জানান, আমার প্রতিমাসে উপার্জন ১০-১২ হাজার টাকা, কিভাবে সংসার খরচ শেষে আমি প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা তোমাকে প্রদান করবো। এতে সংসারে কলহ আরও বেড়ে যায়। অর্থলিপ্সু স্ত্রী শিল্পী রানী দাস তার স্বামীকে জানান তুমি চুরি করে টাকা দিবে না কিভাবে দিবে তা আমার জানার বিষয় না। সংসার খরচ শেষে আমাকে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। এক পর্যায়ে শিল্পী রানী দাস তার শাশুরীর ভরণপোষণে বাঁধ সাধেন এবং প্রতিবন্ধী স্বামী সুমন ঘোষকে তার বাড়ি লিখে দেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এর মধ্যে সুমন ঘোষের সংসারে তার শশুর দীনেশ চন্দ্র দাস, শাশুরী দিপালী রানী দাস, তার স্ত্রীর বড় ভাই খুশী দাস ও শ্যালিকা এসে বসবাস শুরু করেন। এদিকে প্রতিবন্ধী স্বামী সুমন ঘোষ তার পরিবার ও শুশুর বাড়ীর লোকজনের ভরণপোষণ করতে বিভিন্ন জায়গায় ধার দেনা করে গিয়ে প্রায় ৬-৭ লক্ষ টাকা ঋণ হয়ে যান। অপরদিকে, তার শশুর বাড়ীর লোকজনকে বাড়ী লিখে না দেওয়ায় ও চাহিদামত অর্থ প্রদান না করায় সুমন ঘোষের বাড়ীতে থেকেই তাকে মারধর ও অত্যাচার শুরু করেন। এর মধ্যে তাদের এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। সুমন ঘোষ সাধ্যমত তার সন্তানের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন। সন্তান হওয়ার পর তার শশুরবাড়ীর লোকজনের অত্যাচারের পরিমান আরও বেড়ে যায়। বাড়িতে তার স্ত্রী সুমন ঘোষের মায়ের উপর প্রতিনিয়ত মানষিক অত্যাচার, অকথ্য ভাষায় গালিগালাচ ও ভরণপোষন বন্ধ করে দেন। বাড়িতে তার বোন-ভাগ্নী বা যে কোন আত্মীয় স্বজন এলেও তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাচ করেন। সুমন ঘোষকে তার নিজ বাড়িতে পর্যন্ত প্রবেশ করতে দেননা তার শশুর বাড়ীর লোকজন। গত ১৫/০৯/২০২৪ইং তারিখ বেলা ২:৩০ ঘটিকার সময় তার স্ত্রীর বড় ভাই (২নং বিবাদী) আরও ১০-১২ জন লোক অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সুমন ঘোষের বসত বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সবাইকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে যায়। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে সুমন ঘোষ তার বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্রই তার স্ত্রী, শশুর, শাশুড়ী ও স্ত্রীর বড় ভাই তাকে মারার জন্য ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে রাস্তায় পড়ে যাওয়া মাত্র ২নং আসামী খুশী দাস ও তার বাবা দীনেশ চন্দ্র তাকে এলোপাথারি কিল ঘুষি মেরে আহত করে এবং কাপড়চোপর ছিড়ে ফেলে। খুশী দাসের ভয়ে পাথরাইল এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। খুশী পাথরাইল এলাকায় গিয়ে সগৌরবে দা উচিয়ে ঘুরে বেড়ান আর বলে বেড়ান আমি মোর্শেদ কাউন্সিলের লোক। কার বাপের এতো সাহস আছে আমার সামনে আসার। কেউ সুমনের পক্ষে কথা বললে গলা নামিয়ে ফেলবো। প্রতিবন্ধী স্বামী স্ত্রী ও শশুরবাড়ীর লোকজনের অত্যাচার সইতে না পেয়ে দেলদুয়ার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগকারী সুমন ঘোষ জানান, আমি একজন প্রতিবন্ধি মানুষ এবং প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী। আমি নিয়মিত আমার মা, স্ত্রী ও ছেলের ভরণপোষণ করি। কিন্তু আমার স্ত্রী, শশুর, শাশুরী, স্ত্রীর বড় ভাই ও শ্যালিকা স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন। যে চাপ আমার মতো একজন প্রতিবন্ধীর পক্ষে বহন সম্ভব নয়। এদিকে বাড়ী লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। বাড়ী লিখে না দিলে আমার পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমাকে বাড়ি যেতে দিচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আমি দেলদুয়ার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানার এসআই জানান, বিষয়টি আমি দেখতেছি।