কালিহাতী প্রতিনিধি ঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদে সরকারি নিয়ম অমান্য করে জন্মনিবন্ধনের জন্য অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে । শিশুর জন্ম থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সরকারি নিয়মানুযায়ী জন্মনিবন্ধনের জন্যে কোনো ফি নেওয়া হয় না।
শিশুদের ৫ বছর বয়স পর্যন্ত ২৫ টাকা ও ৫ বছরের ওপরে সব বয়সীদের জন্য ৫০ টাকা ফি নেওয়ার নিয়ম করে দিয়েছেন সরকার। কিন্তু সরকারের এ নিয়ম মানছেন না কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) আসাদ। তিনি চৌকিদার পদে চাকরি করেও অবৈধভাবে টাকা কামানোর জন্য করছেন পরিষদের কম্পিউটারের কাজ। জানা যায়, ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষা মূল সনদ বা তথ্য সংশোধনর কপি ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বরের বাংলাদেশ সরকারের গেজেটে প্রকাশিত বিনা ফিসে অনুমোদিত হয়। সেই জন্ম সনদে ৩০০/- (তিনশত) টাকা থেকে ৫ (পাঁচশত) টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নে বাসিন্দারা। অভিযোগ রয়েছে আসাদ চৌকিদার হিসেবে নিয়োগ থাকলেও তিনি পরিষদে চৌকিদারের কোনো কাজ না করে ইউপি সচিবের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটারের কাজ করেন। সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে জন্ম সনদে অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং আসাদ চৌকিদার কম্পিউটারে কাজ করার বিষয়ে পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নৃপেন চন্দ্র দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার পরিষদে জন্ম সনদে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় না। চৌকিদার কম্পিউটারের কাজ করতেই পারে। চৌকিদার হইয়ে কম্পিউটারের কাজ করে অভিযোগের বিষয়ে আসাদের নিকট জানতে চাইলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আজাদ চেয়ারম্যান তিন তিন বারের চেয়ারম্যান বলে কাউকে তোয়াক্কা না করে বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, মাতৃত্বকালীন ও বিধবা ভাতাসহ ভিজিডি কার্ডে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী অসহায় গরীব মানুষের জন্যে বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা করেছেন সেখানে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে টাকা গ্রহণ করছেন চেয়ারম্যান আজাদ। ইউনিয়নের মুনুটিয়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের স্ত্রী আনোয়ারা (৭০) জানান, বয়স্ক ভাতার জন্যে চেয়ারম্যানকে এক হাজার টাকা দিতে হইছে। শিহরাইল গ্রামের নাজীরের স্ত্রী বিলকিস বেগম (২৮) প্রতিবন্ধী ভাতার জন্যে দিতে হইছে এক হাজার টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও বেশ কিছু কার্ডধারি টাকা দিয়েও বলতে নারাজ।
এ বিষয়ে পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বলেন, আমি তিন বারের চেয়ারম্যান। জন্মনিবন্ধনের অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো প্রমাণ পাইনি। সকলকে বলা আছে অতিরিক্ত টাকা দেবেন না। সরকারি ফি ৫০ টাকা সেখানে ফি ৫০ টাকা সহ মোট ১০০ টাকা নিতে পারে। আসাদ চৌকিদার যদি কোনো অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে আমি ডিসি বরাবর আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিবো। ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, কেউ যদি জন্ম নিবন্ধনে অতিরিক্ত টাকা চায় তাহলে সরাসরি আমাকে জানাবেন। আমি তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। বিভিন্ন ভাতার কার্ডে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি অশিকার করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসেইন বলেন, সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিষয়ে এবং কোনো ভাতার কার্ডে টাকা নেওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কারো লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।