সরিষাবাড়ীতে ২ বছরেও সংস্কার হয়নি ভেঙ্গে পড়া ব্রীজ ॥ পুনঃনির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন

Spread the love

মোস্তাক আহমেদ মনির ঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বন্যায় পানির তোড়ে ভেঙ্গে পড়ার ২ বছর পার হলেও সংস্কার হয়নি শুয়াকৈর ঝিনাই নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটি। চরম দূর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার প্রায় ২৫ টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। যাতায়াতের নেই বিকল্প রাস্তা, ফলে কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারে নিতে না পাড়ায় নায্য দাম পাচ্ছে না কৃষক। ব্রীজটি পুনঃনির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। শনিবার দুপুরে উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর ভাঙ্গা ব্রীজপাড় এলাকায় ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক গ্রামের হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করে। জানা যায়, উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর ২০০৩-০৪ অর্থবছরে এলজিইডির অর্থায়নে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রীজটি নির্মিত হয়। ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটির নির্মাণকাজ ২০০৬ সালে শেষ হয়।

নির্মাণের প্রায় ১৪ বছর পর ২০২০ সালের ২২ জুলাই বন্যার পানির তোড়ে সেতুর মাঝখানের চারটি পিলার ও তিনটি স্প্যানসহ প্রায় ৬০ মিটার অংশ ভেঙে পড়ে। ২ বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ভাঙ্গা ব্রীজটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি কতৃপক্ষ। বন্যায় ভেঙ্গে পড়া ব্রীজটি দ্রুতসময়ের মধ্যে পুনঃনির্মানের কিংবা সংস্কারের দাবি জানান বক্তারা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কামরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম আশরাফুল ইসলাম, সরিষাবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি সোলায়মান হোসেন হরেকসহ স্থানীয়রা। ইউরিকা স্কুলের ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইয়াসিন বলেন, ব্রীজ ভাঙ্গার কারনে চলাচলের জন্য আমার খুব কষ্ট হয়। নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হয়।

নৌকার জন্য অনেক সময় নদীর পাড়ে বসে থাকতে হয়। স্কুলে সময় মতো যেতে পারি না। অনেক সময় ভিজে নদী পাড় হয়ে স্কুলে যেতে হয়। ৭০ বছরের বৃদ্ধ ফজিল মিয়া বলেন, ব্রীজটি আমাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। এটি ভাঙ্গার পর আমাদের খুবই সমস্যা হচ্ছে। চলাচলের সমস্যা থাকায় কৃষি পণ্য বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারি না। বাড়ীর উপর থেকে কম দামে বিক্রি করতে হয়। নৌকা পাওয়া যায় না। অনেক সময় নৌকার জন্য রোদের মধ্যে বসে থাকতে হয়। এই বয়সেও পানিতে ভিজে মাঝে মাঝে বাজারে যেতে হয়। অসুস্থ হলে বা কোন রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য যাতায়াতের কোন বিকল্প রাস্তা নেই। সরকারের কাছে আমাদের দাবী অতি তাড়াতাড়ি যেন আমাদের চলাচলের একমাত্র ব্রীজটি মেরামত করে দেয়া হয়। উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যেই এলজিইডি থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নিয়ে ব্রীজটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। ব্রীজটি সংস্কারের প্রক্রিয়াধীন আছে।