স্টাফ রির্পোটার : ‘শান্তি শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও প্রগতি’ বাংলাদেশ পুলিশের মূলনীতি। স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে শুরু করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুলিশের যেমন রয়েছে ঐতিহাসিক অবদান ঠিক তেমনি গুটি কয়েক সদস্যের কারনেও এই মহান পেশায় নিয়োজিত বাহিনীটিরও রয়েছে অন্ধকার কিছু কালো অধ্যায়। তবুও বাংলাদেশ পুলিশের অনেক ত্যাগী সৎ নির্ভীক সাহসী সদস্যদের কারনে আজও এই বাহিনীটি জনমানুষের হৃদয়ে অঙ্কিত হয়ে রয়েছে তাদের আত্মত্যাগের জন্য। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী মূলত জনসেবামূলক একটি প্রতিষ্ঠান। একঝাঁক তারুণ্য অভিজ্ঞদের কারনে দেশের আইনশৃঙ্খলা, জঙ্গীবাদ, মাদক, সন্ত্রাসী কার্যক্রম নির্মূলের পথে।
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যেসকল কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন তারা দেশের সেবায় আত্মত্যাগেও দ্বীধান্নীত হননা। ঠিক তেমনি একজন পুলিশ অফিসার যিনি তার দ্বায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে সমাজের তৃণমূল মানুষের সাথে মিলে মিশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বলছি টাঙ্গাইল জেলায় সার্কেল অফিসার হিসেবে ১৩ মাসে ১১ বার শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব অর্জনকারী সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (আইজিপি পদক প্রাপ্ত) ফারহানা আফরোজ জেমি কথা । তার এই গৌরবস্বীকৃত অজর্ন পুলিশ বাহিনীতে খুবই কম প্রতিয়মান হয়। কর্মজীবনে তিনি অন্যায়, মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে আপোষহীন এক পুলিশ অফিসার। পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে একজন নারীও যে সমাজে মাথা উচু করে সততার সাথে দেশ বা দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার গুরু দায়িত্ব পালনে কৃতিত্ব দেখাতে পারেন তার বাস্তব উদাহরন ও ইতিহাস সৃষ্টিকারী একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার ফারহানা আফরোজ জেমি। ‘আইজিপিস এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিসেস ব্যাজ’ পুলিশ বাহিনীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা পদক। জানা যায়, কর্মক্ষেত্রে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন, বাহিনীর মর্যাদা বেড়েছে এমন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিবছর পুলিশ সপ্তাহে আইজিপি ব্যাজে মনোনীত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের এ পদক দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা বিধান, জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড, মামলার রহস্য উদঘাটন, ভালো পুলিশিং, সরকারি ও ব্যক্তিগত কাজের মাধ্যমে বাহিনীর ভাবমূর্তি বাড়ানোসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবদানের ভিত্তিতে পদকের জন্য যোগ্য কর্মকর্তা ও সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়। আর সেই গৌরবময় সম্মাননা পদকে ভূষিত হয়েছেন মধুপুর সার্কেল অফিসার (সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার) ফারহানা আফরোজ জেমি। তিনি টাঙ্গাইলের মধুপুর সার্কেলাধীন মধুপুর ও ধনবাড়ী থানায় বিগত ২০ মাস যাবত দায়িত্ব পালন করছেন। আর ২০ মাসের মধ্যে মাত্র ১৩ মাসেই তিনি এমন অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জনের অধিকারিণী হয়েছেন।
মাগুরা জেলার পশ্চিম স্টেডিয়াম পাড়ায় জন্ম ফারহানা আফরোজ জেমির। মাগুরার এই কৃতি সন্তান শিক্ষা জীবন শেষ করে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসাবে রংপুরে কর্মজীবন শুরু করলেও মানবসেবা ও দেশের সেবায় ব্রতী হয়ে পরবর্তীতে ৩৬তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে ২০১৮ সালে ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের গৌরবময় পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। পুলিশে কর্মজীবনের শুরুতে তিনি গাজীপুর জেলা পুলিশের এএসপি ট্রাফিক ও পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশে এএসপি এসএসএফ হিসেবে সৎ নির্ভীক অন্যায়ের সাথে আপোষহীন ভাবে তার উপর অর্পিত গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন । এরপর ২০২৩ সালের ৮ এপ্রিল যোগদান করে সহকারী পুলিশ সুপার মধুপুর সার্কেল অফিসার হিসেবে তিনি কর্মরত আছেন। কর্মজীবনে ফারহানা আফরোজ জেমি সাধারণ মানুষ ও অধিনস্ত থানায় সেবাপ্রত্যার্শীদের সঠিক সেবা দিয়ে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন। দায়িত্ব পালনে ঈর্ষণীয় সাফলতা দেখিয়ে মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। জনমুখী সেবা চালু করতে একের পর এক সাহসী ও সময়োপযোগী নির্দেশনা দিয়েছেন। সাহসিকতা, দক্ষতা আর সময়োপযোগী ও দূরদর্শী নেতৃত্বগুণ তাকে অসামান্য অবস্থান নিয়ে গেছে।
ছোট বড় যেকোনো সমস্যায় পড়ে সাধারণ মানুষ ছুটে আসেন এই মানবিক পুলিশ কর্মকর্তার কাছে। যে কোনও ব্যক্তি তার সংস্পর্শে আসলে তার সমস্যার বিষয় গুলো মনোযোগ দিয়ে শোনার পর সঠিক পরামর্শ প্রদান করা ফারহানা আফরোজ জেমির গুণাবলী প্রধান বিষয়। নিজেদের যাবতীয় সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান পাচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয় তার অধিনস্তদের প্রতিও তিনি অত্যন্ত আন্তরিক এবং সদয়। যে কারণে সবার আস্থও বেড়েছে তার প্রতি ।
পুলিশ নিয়ে অনেকের বিরূপ ধারণা থাকলেও ফারহানা আফরোজ জেমি সে ধারণা সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছেন। সহকারি পুলিশ সুপার ফারহানা আফরোজ জেমি একজন ব্যতিক্রমধর্মী পুলিশ অফিসার। প্রতিনিয়ত তিনি সহকর্মী ও সাধারণ জনগণের আদর্শগত ভিন্নতা মেনে নিয়ে পরস্পরের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। “পুলিশ জনগণের বন্ধু” তিনি এই বাক্যটির উৎকৃষ্ট নিদর্শন। তিনি অন্যতম একজন আদর্শ পুলিশ অফিসার যিনি তার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আধুনিকতা, প্রযুক্তি ও সততা দিয়ে অপরাধ দমন করার চেষ্টা করেন।
তাছাড়া কোটা বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় অত্যন্ত ধৈর্য্যশীলতা ও পেশাদারিত্বের কারণে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী ও মধুপুর উপজেলায় কোটা বিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি পালনের সময় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়োজিত অফিসার ও ফোর্সদের ডিউটি তদারকি করেন সহকারী পুলিশ সুপার মধুপুর সার্কেল ফারহানা আফরোজ জেমি। তিনি তার অধিনস্থ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছাত্র আন্দোলনে কোন প্রকার বলপ্রয়োগের অনুমতি প্রদান না করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। সহকারী পুলিশ সুপার ফারহানা আফরোজ জেমি বলেন,“পুলিশই জনতার এবং জনতাই পুলিশ” আমি এই স্লোগানকে সামনে রেখে এবং সাধারণ মানুষের দোয়া ও ভালবাসা নিয়ে বাংলাদেশকে মাদক, জঙ্গি, সন্ত্রাস মুক্ত করতে এগিয়ে যাব।
তিনি আরো বলেন, আমরা অতন্ত্র প্রহরী হিসাবে রাত জেগে থাকি শুধু জনগণ শান্তিতে ঘুমাবে বলে, আমাদের ঈদের ছুটিও নেই শুধু জনগণ যাতে তাদের এই ঈদকে সুন্দর, সুশৃঙ্খল এবং শান্তিতে কাটাতে পারে। কত পুলিশ অফিসার প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন দেশকে জঙ্গি, সন্ত্রাস মুক্ত করতে।
আমি একটি কথা বলবো জনগণের উদ্দেশ্যে-আপনারা পুলিশ কে নিজের বন্ধু ভাবুন, পুলিশ জনগণের বন্ধু। পুলিশজনগণের শুধু বন্ধুই নয়, সেবকও। পুলিশ সব সময়ই জনগণের বন্ধুহিসেবে জনগণের পাশে ছিল এবং আগামীতেও থাকবে। জনগণের আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া পুলিশের পক্ষে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর সেবা দেয়া সম্ভব নয়। সহকারি পুলিশ সুপার ফারহানা আফরোজ জেমির সততা ও ন্যায়নিষ্ঠায় সমগ্র মধুপুরবাসী গর্ববোধ করেন।
মধুপুরবাসীর মতে যে দিন বাংলাদেশের প্রতিটা থানায় একজন করে ফারহানা আফরোজ জেমির মতো সৎ পুলিশ অফিসার থাকবেন সেদিনই বাংলাদেশ হয়ে উঠবে নিরাপদ, সুন্দর এবং শান্তিময় দেশ। তারমতো দক্ষ, সৎ ও কর্তব্যপরায়ন পুলিশ অফিসার বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জন্য গর্ব। প্রতিটি অপরাধ দমনে ফারহানা আফরোজ জেমির মতো পুলিশ অফিসারের সান্নিধ্য পেলে অপরাধ দমনে বাংলাদেশ পুলিশ অনেক এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।
ব্যক্তিজীবনে ফারহানা আফরোজ জেমি জমজ ২ কন্যা সন্তানের জননী এবং তার স্বামী শহিদুল ইসলাম টাঙ্গাইল জেলাধীন সখিপুর উপজেলায় সাব রেজিস্ট্রার পদে কর্মরত আছেন।