সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : কার্তিক মাস শেষ হয়ে হেমন্তের মাঝখানে শীতের আমেজ পড়েছে সলঙ্গা এলাকায়। অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতেই শীত যেন জেঁকে বসেছে।শীতের পাশাপাশি সব খানেই পড়ছে হালকা কুয়াশা। আর শীত শুরুতেই সলঙ্গা থানার বিভিন্ন হাটবাজার ও ফুটপাতে চলছে শীতবস্ত্রের জমজমাট বেচাকেনা। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষসহ প্রায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ফুটপাত বাজারগুলো থেকে শীতের কাপড় কেনাকাটা শুরু করছে।শীতে সর্দি,কাশি,ঠান্ডাসহ শীতকালীন নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছেন সলঙ্গাবাসী।তাই কিনছেন হালকা ও মাঝারি ধরনের শীতের গরম পোশাক।
গতকাল বৃহ:বার দুপুরে সলঙ্গা বাজার জনতা ব্যাংকের সামনে দেখা যায় ক্রেতাদের ভীড়।শুধু তাই নয়,বাজারের মোহাম্মদ আলী মার্কেট,তালুকদার মার্কেট,বরাদ আলী সুপার মার্কেট,ভুষালহাটা,মাংশহাটার ডোপঘর গুলোতে ঘুরে দেখা গেছে শীতবস্ত্র বেচা-কেনা। মানুষ ঈদের মার্কেটের মতো আগ্রহ নিয়ে শীতের কাপড় কিনতে দেখা যায়।
সিয়াম গার্মেন্টস্ মালিক হাফিজ বলেন,আমরা বছরে দুই ঈদ ছাড়াও এই শীতে একটু বাড়তি ব্যবসা করার সুযোগ পেয়ে থাকি। নামী দামী কম্বল,চাদর,শীতবস্ত্র ছাড়াও কাজিপুরের জুট কাপড়ের কম্বলও বিক্রি করছি। তবে সারা বছর এ সুযোগ পাওয়া যায় না বলেও তিনি জানান। ব্যবসায়ী জহুরুল ও শাহ আলম বলেন,গত বছরের চেয়ে এবারে শীত আসতেই ক্রেতারা আগে ভাগে শীতের কাপড় কেনা শুরু করেছে।
ক্রেতা জেসমিন নাহার বলেন,আমরা গরিব মানুষ।দামী শীতের পোষাক কেনার মত সামর্থ্য নেই।তাই শীত পড়ার আগেই কিছু শীতের পোশাক কেনার জন্য ফুটপাতের মার্কেটে এসেছি।
বর্তমানে সংসার চালাচেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই ফুটপাতের পোশাকই আমাদের এক মাত্র ভরসা।
অন্যদিকে জর্ডন রোড এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া বলেন, শীত শুরুর আগেই মার্কেটে কিছুটা ভিড় বাড়ছে। মানুষের ভিড়ের কারণে দোকানেই ঢোকা যাচ্ছে না। দরদাম করে কেনাতো পরের কথা। তার পরও একটু আগে ভাগে কিনতে আসলাম। না হলে পরে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে।
সরেজমিন মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শীত বস্ত্রের মধ্যে বেশি বেচা-কেনা হচ্ছে ছোট বাচ্চা ও বয়স্কদের কাপড়। মাথার টুপি, পায়ের ও হাতের মোজা, মাপলার, সুয়েটার, জাম্পার, ফুলহাতা গেঞ্জির দোকানেই বেশি ভিড় দেখা গেছে। মহসিন মার্কেট ও সিটি মার্কেটের কম্বল দোকানগুলোতেও ভিড় দেখা গেছে। শীত বস্ত্রের দোকানে ক্রেতার ভিড় বেড়ে যাওয়ায় সুযোগ বুঝে বিক্রেতারাও এবছর দাম অতিরিক্ত নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছে ক্রেতারা। বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিটি পণ্যের অতিরিক্ত দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অধিকাংশ ক্রেতারা। সিটি করপোরেশনের আশপাশের পোশাকের দোকানে অনেকেই কিনছেন শীতের পোশাক। বিক্রেতারা বসেছেন গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে। নগরীর আনাচে-কানাচে ঘুরে ভ্যান গাড়িতে করে যারা শীতের পোশাক বিক্রি করছেন তাদের ব্যবসাও জমজমাট। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর শীত বেশি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সাধারণ জনগণ।
ফুটপাতের ভ্যানগাড়ি থেকে পোশাক কেনা রিকশা চালক সোহেল বলেন, হঠাৎ শীত নামার কারণে সন্ধ্যার পরে ঠান্ডা নিবারণের জন্য একটি সোয়েটার কিনলাম মাত্র ১০০ টাকা দিয়ে।
তিনি আরো বলেন, ১ শ’ টাকার এই সোয়েটার দিয়ে এবছরের পুরো শীত মোকাবেলা করবো। সামর্থ্য না থাকায় আমি প্রতিবছরই ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে শীতের পোশাক কিনে থাকি। তাই এবছরও কিনলাম। ফুটপাতের দোকান হলো গরিবের শপিং মল। তাই আমার মতো গরিবরা এ দোকানগুলো থেকে প্রতিবছর শীতে কাপড় কিনতে থাকে।