নজরুল ইসলাম চান :
অনেকেই ধারণা করছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যেভাবে ব্যবহার শুরু হয়েছে তাতে মানব মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে কার্যক্ষমতা হারাবে। মস্তিষ্কের চিন্তার সেলগুলোকে ব্যবহার না করলে সেগুলো আস্তে আস্তে জড় পদার্থের রূপ নিতে পারে এরকম আশঙ্কা অনেকেই করছেন। কৃত্রিম বুদ্ধির উপর নির্ভরশীল হয়ে মানুষ অনেক কিছু ভুলে যাবে। তবে এর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটি দিকে রয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মানব মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে সেগুলো হলোঃ
ইতিবাচক প্রভাব-
১. জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়তা:
এআই ভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সরঞ্জাম মানুষের শেখার ক্ষমতাকে বাড়ায়। এটি দ্রুত তথ্য বিশ্লেষণ ও সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে।
২. সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনে সহায়তা:
এআই সৃজনশীল কাজের অনুপ্রেরণা জোগায়। যেমন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, লেখালেখি, বা সঙ্গীত তৈরিতে এআই টুল ব্যবহারে নতুন ধারণা পাওয়া সম্ভব।
৩. মস্তিষ্কের ভার কমানো:
বিভিন্ন রুটিন কাজ স্বয়ংক্রিয় করার মাধ্যমে মস্তিষ্কের চাপ কমায়, যেমন স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করে পরিকল্পনা তৈরি করা বা কাজের সময়সূচি নির্ধারণ।
৪. স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করা:
এআই ভিত্তিক ডায়াগনোসিস ও থেরাপি মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা মস্তিষ্কের সুস্থতায় ভূমিকা রাখে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার যেসব নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে সেগুলো হলো- স্মৃতিশক্তি হ্রাসঃ
এআই নির্ভর প্রযুক্তি যেমন স্মার্টফোন বা ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষের নিজস্ব স্মৃতি ও চিন্তা করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে।
মনোযোগ ব্যাহত হওয়াঃ
এআই ভিত্তিক অ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন মস্তিষ্কের মনোযোগ নষ্ট করে এবং দীর্ঘমেয়াদে মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
আলস্য ও নির্ভরতাঃ
এআই বেশি ব্যবহার করলে মানুষ তার নিজস্ব চিন্তাশক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার ওপর নির্ভর কম করতে পারে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগঃ
এআই ভিত্তিক অটোমেশন বা চাকরি হারানোর শঙ্কা মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। এ ছাড়া, এআই-চালিত ফেইক নিউজ বা অ্যালগরিদম-নির্ভর তথ্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব মানব মস্তিষ্কের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে এর ব্যবহার কীভাবে করা হচ্ছে তার ওপর। সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এটি মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে, তবে অসাবধানতায় এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এআই ব্যবহারে সচেতনতা এবং নৈতিকতার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।