সখীপুরে ১০দিনে ৬টি ট্রান্সফরমার চুরি, আতঙ্কে এলাকাবাসী

Spread the love

জুয়েল রানা :

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ১৭টি ফিডারের আওতাধীন গত ১০দিনে ৬টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির হয়েছে। এতে সাময়িক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বিদ্যুতের গ্রাহকদের। এ চুরির ঘটনায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলা থেকে এ উপজেলাসহ পাশ^বর্তী ৮টি উপজেলার আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ১৭টি ফিডারের আওতায় এ কার্যক্রম চলে। মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের গাইড়াবেতীল রবি টাওয়ার এলাকা থেকে ১৮ মার্চ ২টি, দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের লাঙ্গুলিয়া শিকদার বাড়ী এলাকা থেকে ১৯ মার্চ ১টি, ২২ মার্চ গজারিয়া ইউনিয়নের পাথরপুর বাঘবেড় এলাকা থেকে ১টি ও একই ইউনিয়নের পাথরপুর চৌরাস্ত থেকে ১টি এবং মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের মোথারচালা এলাকা থেকে ২৫ মার্চ রাতে ১টি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মধ্যে রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার স্বাভাবিক ঘটনা মনে করেন তারা। কিন্তু পরে সকালে শুনতে পান ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এসকল ট্রান্সফরমারের আওতায় প্রায় ৯’শ পরিবার সাময়িকভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ৫টি ট্রান্সফরমার সংযোগ দেওয়া হলেও উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের পাথারপুর চৌরাস্তার ট্রান্সফরমারটি এখনও সংযোগ দেওয়া হয়নি।

বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রত্যেকটি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলা হয়েছে। তাদেরকে সচেতন করা হচ্ছে। তবে ধারনা করা হচ্ছে চোরের একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিভিন্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতিমধ্যে ৬টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। আরও ৪টি ট্রান্সফরমার চুরির উদ্দেশ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও নিতে পারেনি, সেগুলো বিদ্যুৎ অফিসে আনা হয়েছে। ট্রান্সফরমার চুরি ও যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ায় বিদ্যুৎ অফিসের প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ওইসব ঘটনায় মির্জাপুর থানায় ২টি এবং সখীপুর থানায় ১টি মামলা করা হয়েছে।

লাঙ্গুলিয়া গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক দুলাল হোসেন বলেন, রাতে ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে যায়। পরের দিন সকালে বিদ্যুৎ অফিসকে অবহিত করি। দুইদিন পর বিদ্যুৎ অফিস আমাদের ট্রান্সফরমার সংযোগ দিয়েছে। ট্রান্সফরমারের জন্য কোন টাকা লাগেনি, শুধু সংযোগ দেওয়ার সময় কর্মচারীদের খরচ দিয়েছি।

বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির বিষয় সত্যতা স্বীকার করে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, যারা বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরফমার চুরি করেছে তারা সমাজ, দেশ ও জাতির শত্রু। এদেরকে প্রতিহত করতে যার যার অবস্থান থেকে সর্তক থাকতে হবে। চুরির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করেছে বলেও জানান তিনি।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিডিবির (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) সখীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর তালুকদার বলেন, আমি গত ২০ মার্চ কর্মস্থলে যোগদান করেছি। আমি ও আমার সহকারী প্রকৌশলী ঘটনাস্থল গুলোতে গিয়েছি। স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাইনি।

এ জন্য জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্ত করতে পারিনি। গ্রাহকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছি। বৈদ্যুতিক মালামাল চুরির বিদ্যুতায়ন আইনে থানায় অজ্ঞাত নামে মামলা করেছি। জড়িতদের সনাক্ত করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চোর ধরিয়ে দিতে পারলে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তাকে ১০হাজার টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে।

যুগধারা ডট টিভি/অন্তু