স্টাফ রিপোর্টার :
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাজার সংলগ্ন এলেংজানী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু কেটে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এই অবৈধভাবে বালু কাটার ফলে কোটি টাকায় নির্মিত ও জনগুরত্বপুর্ন এলেঙ্গা ব্রিজটি হুমকির মুখে পড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রশাসনের কাছে জানিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছেনা। তাদের অভিযোগ প্রশাসনের সাথে আতাঁত করেই নদী থেকে বালু কেটে বিক্রি করছে ওই মহলটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার চুইনাবাড়ি ও বাঁশি গ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত এলেংজানী নদীর পাড়ে দুইটি ভেকু বসিয়ে দিনরাত বালু কাটা হচ্ছে। কর্তনকৃত এই বালু ছোট ড্রাম ট্রাক দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে। ড্রামট্রাক ভর্তি বালু পরিবহন করার সময় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এলেঙ্গা বাজারের পশ্চিম পাশে অবস্থিত ওই সেতু।
এ ছাড়াও বালু পরিবহনের জন্য ফসলি জমি কেটে রাস্তা তৈরি করার ফলে অনেক কৃষক তাদের জমিতে ফসল বুনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বালু কাটা চক্রটি অত্যান্ত প্রভাবশালী হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা কোন প্রকার প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা।
এ ছাড়া বালুবাহী ট্রাকের বেপরোয়া গতির কারণে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে স্থানীয়রা। অত্যান্ত ব্যস্ত এলেঙ্গা বাজারের রাস্তাটি ব্যবহার করে বালু পরিবহনের ফলে প্রায়ই লেগে থাকছে যানজট। যানজটের কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছে এলেঙ্গা হাটবাজার ও পৌরসভায় আসা সাধারণ জনগন।
গত ৯ই মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে এলেঙ্গা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পৌলি মহেলা আদর্শ গুচ্ছ গ্রামের মোস্তফা মিয়ার (১৩) বছবের শিশু আরাফাত মিয়া,
বালু বাহি ট্রাকের নিচে চাপা পরে নিহতের ঘটনা ঘটেছে , এ বিষয়ে একদিন সংবাদমাধ্যমে নিউজের পরও নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা ।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, পৌরসভার বাঁশি গ্রামের মাজেদুর ও শরিফ মিলে দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু কেটে বিক্রি করে আসছে। এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। আর কেই প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানোর ভয় দেখায় তাদের।
এ ছাড়াও দিনরাত বালুভর্তি ট্রাক যাতায়াতের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ট্রাক চলাচলের শব্দে রাতে বাসা বাড়িতে ঘুমানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ট্রাকে ওড়ানো বালি বাসায় উড়ে গিয়ে আসবাপত্রসহ খাদ্য সামগ্রী নষ্ট করছে।
বালু ব্যবসায়ী মো. মাজেদুর রহমান জানান, তিনি নদী থেকে নয় তার ক্রয়কৃত জমি থেকেই বালু কেটে বিক্রি করছে। অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করেই তিনি এ ব্যবসা করছেন।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) মাটি বিক্রেতা সাগর মিয়ার সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি জানান, সাংবাদিক সহ থানা ও সকল নেতাকর্মীদের ম্যানেজ করেই চালাচ্ছি, ২০ মিনিট আগেও ইউএনও এসেছিলো তাদের সাথে কথা হয়েছে, ভাই আপনারা চলে যান আপনার নাম্বার সেভ করে রাখলাম ঈদের আগে কথা বলব ।
কালিহাতী উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভুমি) মো. নাহিদ হোসেন জানান, আমি বিষয়ে কিছুই বলতে পারব না আপনি ইউএনও স্যার অথবা ডিসি স্যারকে জানান ।
অবৈধভাবে নদী থেকে বালু কর্তনের বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হুসেইন জানান, আমি গতকালও এসিল্যান্ড কে পাঠিয়ে খোঁজ নিয়েছি, দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু