জুয়েল রানা :
টাঙ্গাইলের সখীপুরে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনে (গার্ড অব অনার) বাধা দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) বেলা দুইটায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খান (নয়া মুন্সি) মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারী ইউএনও এলে তিনি তাকে বাধা দেন। এ সময় তিনি একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে দিয়ে গার্ড অব অনার দিতে বলেন। এরপর ইউএনও চলে গেলে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নারী ইউএনওর নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাফন অনুষ্ঠিত হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খান গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সখীপুর বাজারের নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। শনিবার বেলা দুইটায় সখীপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জানাজার নামাজের আগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদর্শনের সময় ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারী কর্মকর্তা আসায় এমন ঘটনা ঘটে।
জানাজার নামাজের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় কাদের সিদ্দিকী ইউএনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কোন মহিলার গার্ড অব অনার দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধার লাশের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন। যদি এখন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকত তাহলে এখানকার অনেক কর্মকর্তাকে লাথি মেরে ঢাকায় পাঠাতাম।’
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার কারণে এই ইউএনওকে আগামীকালের (৩০ এপ্রিল) মধ্যে সখীপুর থেকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আব্দুল হামিদ খান একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দেশ স্বাধীন হলেও দেশের স্বাধীনতা অর্থবহ হয় নাই, মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান পায়নি। আমি খুবই মর্মাহত পুলিশের গার্ড অব অনার নিয়ে। রাত বারোটার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেও শনিবার বেলা দুইটার মধ্যেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে কেউ আসেননি। মেয়ে যত বড়ই হোক মেয়েদের জানাজায় শামিল হওয়ার সুযোগ নেই।’
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, আমি জানাজার নামাজ পড়তে যাইনি। আমি গিয়েছিলাম বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী হাজার লোকের সামনে আমাকে অপমান করেছেন।
কাদের সিদ্দিকী নিঃসন্দেহে একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু