স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে টাঙ্গাইলের অর্ধশতাধিক চরমপন্থী

Spread the love

অন্তু দাস হৃদয় :

টাঙ্গাইলের আতঙ্কের নাম পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (সর্বহারা)। লুটতরাজ, জিম্মি, অপহরণ ও খুনসহ নানা অপরাধ ছিল তাদের নেশা ও পেশা।

সেই অপরাধের অন্ধকার পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি টাঙ্গাইলের অর্ধশতাধিক চরমপন্থি সদস্য।

এতদিন গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর আতঙ্ক থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের আত্মগোপন করে রেখেছিলেন এসব চরমপন্থি সদস্য। তবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আগামী সোমবার (২২ মে) তারা র‌্যাবের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকেই অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করবেম বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, একটা সময় এ অঞ্চলকে বলা হতো ‘রক্তাক্ত জনপদ’। এ অঞ্চলের চরমপন্থিদের দাপটে রাত গভীর হলেই কলাপসিবল গেট আটকে আতঙ্কে থাকতেন খোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই। নব্বইয়ের দশক থেকে এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন চরমপন্থিদের হাতে। এমনকি প্রাণ দিতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্যকেও।

এহেন অচলাবস্থায় সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফেরাতে কাজ শুরু করে পুলিশের এলিট ফোর্স ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাবের অভিযানে বিভিন্ন চরমপন্থি গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ অনেক সদস্যকেই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

এক পর্যায়ে চরমপন্থি দলের বাকি সদস্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। এতে টাঙ্গাইলের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।

তারপরও আতঙ্ক শেষ হয়নি সাধারণ মানুষের মাঝ থেকে। নানা অপকর্ম অব্যাহত রাখে চরমপন্থিরা। র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ক্রমাগত আভিযান পরিচালনা করতে থাকে। অবশেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার চাপ সইতে না পেরে চরমপন্থি দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ সদস্যরা অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণের সুযোগ খুঁজতে থাকেন।

এরই অংশ হিসেবে আগামী সোমবার (২২ মে) ৩৬টি অস্ত্রসহ র‌্যাবের নিকট আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন টাঙ্গাইলের অর্ধশতাধিক চরমপন্থি সদস্য।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, তারা অনেকেই ২০০১ সাল থেকে সর্বহারা গ্রুপের সদস্য হয়েছেন। হুগড়ার রফিকের নেতৃত্বে তারা পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। তাদের অনেকের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। কেউ কেউ কারাভোগও করেছেন। এখন রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ দেওয়ায় তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে র‌্যাব-১২ অধিনায়ক মো. মারুফ হোসেন বলেন, সোমবার (২২ মে) তারা আত্মসমর্পণ করবে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে দ্রুত ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের নানাভাবে প্রশিক্ষণ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাবলম্বী করা হবে।

যুগধারা ডট টিভি/অন্তু