স্টাফ রিপোর্টার :
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডে কৃষি জমিতে গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। ফলে কৃষি আবাদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী চরম বিপাকে পড়েছেন।
রবিবার (২৮ মে) সকাল থেকে ধলাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দইলপাড়া এলাকায় বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ কৃষি জমিতে গাছের চারা রোপণ করা শুরু করে। এ সময় এলাকাবাসীর তুপের মুখে পড়েন বিন বিভাগ কর্তৃপক্ষ।
এ দিকে, খাস কৃষি জমি বন্দোবস্তর পাওয়ার জন্য এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দইলপাড়া, শহরগোপিনপুর, আশারিয়া চালা, মোতাজুরি ও রামদেবপুরসহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের নিজস্ব নামীয় কোনও কৃষি জমি নেই। প্রায় প্রত্যেকজনের বাড়ির আশপাশে কিছু কিছু খাস কৃষি জমি রয়েছে।
১৯৯১ সালে বন বিভাগ বাগান তৈরির সময় জনগণের জন্য কিছু কিছু আবাদি কৃষি জমি বাদ দিয়ে বাগান সৃজন করে। এরপর থেকে স্থানীয়রা খাস জমিতে কৃষি আবাদ করে আসছিল। এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠি কোনও রকমে কৃষি আবাদ করে তাদের সংসার চালিয়ে আসছে।
গজারী বনের ভেতর বন বিভাগ কর্তৃক সুফলা বাগান তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও রহস্যজনক কারণে বনের ভেতর বাগান তৈরি না করে কৃষি জমিগুলোতে সুফলা বাগান তৈরির কার্যক্রম শুরু করেছে। কৃষি জমিতে সুফলা বাগান তৈরি হলে সাধারণ জনগণ তাদের পরিবার নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়বেন।
স্থানীয়া বাসিন্দা ফজলু বলেন, ‘জমিগুলো বন বিভাগের। কিন্তু আমরা এলাকাবাসীরা যার যার বাড়ির পাশপাশের কৃষি জমিতে ধান, সবজি ও কলা বাগান করে সংসার চালিয়ে আসছিলাম। এখন এই শতশত একর কৃষি জমিতে বন বিভাগ বাগান তৈরি করছে। বাগান তৈরি করা বন্ধ না হলে আমাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।
ধলাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, ‘কোনও রকম পরামর্শ না করে বন বিভাগের কর্মকর্তারা হঠাৎ করে কৃষি জমিতে গাছের চারা রোপণ করা শুরু করে। জমিগুলো বন বিভাগের হলেও দীর্ঘদিন ধরে যার যার বাড়ির আশপাশের খাস জমিতে কৃষি আবাদ করে আসছিল গবির ও অসহায় লোকজন। কৃষি আবাদ করেই তাদের সংসার চলছিল। এই কৃষি জমিতে বাগান তৈরি করা হলে গবির মানুষগুলোর না খেয়ে থেকে মরতে হবে।
এ অঞ্চলের মানুষ একেবাবেই গবির। ধান আবাদ, কলা বাগান ও সবজি আবাদ না করতে পারলে তাদের সংসার নিয়ে চলার মতো কোনও পথ থাকবে না। বন বিভাগের কর্মকর্তারা গরিব ও অসহায়দের কিছু কিছু কৃষি জমি ছাড় দিয়ে বাগান তৈরি করতে পারতেন। বন বিভাগের এই সুফলা বাগানের নামে কৃষি জমিতে গাছের চারা রোপণ বন্ধ করা জরুরি। বিষয়টি নিয়ে কৃষিমন্ত্রীসহ একাধিক দপ্তরে কথা বলেছি।’
ধলাপাড়া বিট অফিসার আইয়ুব আলী জানান, ‘জমিগুলো বন বিভাগের। স্থানীয়রা জবরদখল করে বাগান কর্তন করে সেখানে কৃষি আবাদ করে আসছিল। এতে করে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারিয়েছে। এখন এ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে দেড় লাখ গাছের চারা রোপণ করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় গাছের চারা রোপণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু