কোরবান আলী তালুকদার :
কথায় বলে ছাগলে কি না খায়! তবে কী কী খায় সে তালিকা কিন্তু অনেক লম্বা। তাই বলে ছাগল টাকা খায়, তা কেউ বলে না। কিন্তু ছাগল যে তাও খায় তারই প্রমাণ মিলল সাম্প্রতিক আব্দুল জলিলের রাজা-বাদশা। ছাগল দু’টিকে প্রতিদিন একনজর দেখতে আসেন দূরদূরান্তের লোকজন।
ছাগল দু’টির গায়ের রঙ চকচকে সাদা। আছে কালো ছোপ। চকচকে সাদার মধ্যে হালকা কালো। লোম কোঁকড়ানো হলেও সুবিন্যস্ত। শিং দুটো যেনো সেই আগেকার রাজা-বাদশাদের ছুরির মতো, আকাঁ-বাঁকা করে মাথার উপরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় হাট থেকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার সার পলশিয়া গ্রামের জলিল ছাগল দুটি ক্রয় করেন। নাম রাখা হয় রাজা ও বাদশা। শখের বসে কেনা ছাগল দুটিকে নিজের সন্তানের মতোই যত্নসহকারে লালন-পালন করে আসছেন তিনি। নামের সাথে রয়েছে তাদের খাবারেরও মিল।
ভোজন রসিক রাজা-বাদশার খাবারের পছন্দের তালিকায় রয়েছে চানাচুর, চিপস, আপেল, আঙ্গুর, কলা, কোকাকোলা, টাইগার, স্পীডসহ সকল ধরনের কোমল পানীয়। গোসল করানো হয় শ্যাম্পু দিয়ে। বাড়িসহ দাপিয়ে বেড়ায় পুরো এলাকা।
মালিক জলিল মিয়া বাজার কিংবা কাজে যেখানেই যান না কেন পিছু নেয় রাজা-বাদশা। পছন্দের খাবার পেলেই শান্ত থাকে তারা। শখের বসে লালন-পালন করলেও ভালো দাম পেলে কোরবানির ঈদে রাজা-বাদশাকে বিক্রির চিন্তা ভাবনা রয়েছে মালিক আব্দুল জলিল ও স্ত্রী ফিরোজা বেগমের।
আব্দুর জলিলের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির ছাগল দু’টি দেখতে তার বাসায় ভিড় করছে উৎসুক জনতা। ছাগল দু’টি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে এলাকাবাসীর মনে।
স্থানীয় হাসেম আলী জানান, জলিলের নিজের পালিত ছাগল দু’টির দাম চাচ্ছেন তিন লাখ টাকা। এখন দু’টির ছাগলের দাম একটি গরুর দামের চেয়েও বেশি। তাই ছাগল দু’টি দেখতে এসেছি। করিম জানান, আমাদের সামনেই ছাগল দু’টি বড় হয়েছে। ছাগলের এমন খাবার খাওয়ায় আগে কখনই দেখিনি। আর রাজা-বাদশা নামে ছাগলের নাম আগে কখনো দেখিনি।
কালিহাতী থেকে দেখতে আসা সবুজ বলেন, লোকমুখে শুনে আমার বিশ্বাস হয়নি ছাগলে এমন খাবার খায়। তাই নিজ চোখে দেখতে এসেছি।
ফলের দোকানি রবিন ও হাসিব জানায়, রাজা-বাদশার জন্য আমাদের এখান থেকে প্রতিদিন নানারকম ফল কিনে নেন তিনি। এছাড়াও বিকেল হলেই জলিলের সাথে বাজারে আসে ছাগল দু’টো।
আব্দুল জলিল বলেন, এবার কোরবানির জন্য দু’টি বড় ছাগল তৈরি করেছি। আদর করে ছাগল দু’টির নাম দিয়েছি ‘রাজা-বাদশা’। নিজের সন্তানের মতোই লালন-পালন করি। ছাগল দু’টো আমাদের পরিবারের সাথে মিশে গেছে।
তিনি আরো বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন বাড়ীতে ছাগলের ক্রেতা আসছে। অনেকেই দুই লাখ টাকা দাম বলেছে। এখানে বিক্রি করতে না পারলে কয়েকদিন পর হাটে নিয়ে যাবো। ছাগল দু’টির মুল্য নির্ধারণ করেছি তিন লাখ টাকা। দেড় বছরে প্রায় এক লাখেরও বেশি টাকার খাবার খেয়েছে।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু