ঈদুল আজহা উপলক্ষে টাঙ্গাইলে কদর বেড়েছে মাংস কাটার খাইট্টা’র

Spread the love

অন্তু দাস হৃদয় :

আর মাত্র দুই দিন পরই পালিত হবে মুসলমানদের অন্যতম বড় উৎসব ঈদুল আজহা। এই ঈদ (ঈদুল আজহা) কে সামনে রেখে টাঙ্গাইলে কদর বেড়েছে কুরবানির মাংস কাটার (পাটাতন) খাইট্টা’র।

সোমবার (২৬ জুন) টাঙ্গাইলের বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার স’ মিলে (কাঠ চেরাই মিল) দেখা যায়, গাছের গুঁড়ি করাতে ফেলে ছোট ছোট গোল আকৃতির টুকরা তৈরি করা হচ্ছে। এই গোল টুকরা গুলোই কুরবানির মাংস কাটার (পাটাতন) খাইট্টা হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

কোথাও কোথাও স’ মিল থেকে খাইট্টাগুলো ভ্যানে করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এরপর টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে সেগুলো বিক্রি করা হচ্ছে। ছোট, বড় ও মাঝারি আকার অনুযায়ী একেকটি খাইট্টা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০০ টাকা করে।

এ বিষয়ে খাইট্টা ব্যবসায়ী বাদল মিয়া জানান, গত কয়েক বছর থেকে গ্রামাঞ্চলে তেঁতুল গাছ পাওয়া বড়ই দুস্কর হয়ে উঠেছে। যাওবা পাওয়া যায় তা চড়ামূল্যে ক্রয় করতে হচ্ছে। ফলে তেঁতুল গাছ দিয়ে তৈরি করা খাটিয়ার দামও পূর্বের চেয়ে একটু বেশি নেয়া হচ্ছে।

সোহেল মিয়া আরো বলেন, খাইট্টা সব কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায় না। এটি তৈরি করতে হয় এমন কাঠ দিয়ে, যাতে চাপাতির (মাংস কাটার যন্ত্র) কোপে কাঠের গুঁড়া না ওঠে। কোরবানির মাংস কাটার জন্য তৈরি করা এ সব খাইট্টার অধিকাংশই তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি। কারন তেতুল কাঠে সহজে চাপাতির কোপ বসবে না। তাই কাঠের গুঁড়াও উঠবে না। ফলে মাংস নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

এ দিকে স্বপণ স’মিল থেকে ভ্যানে করে খাইট্টা কিনে নিয়ে যাওয়া আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার বাসা প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিটের রাস্তা। আমি প্রতি বছর এখান থেকে খাইট্টা কিনে নিয়ে যাচ্ছি। সব সময় বিক্রি করি না। ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাসার সামনে অবসর সময়ে বিক্রি করি। একেকটি খাইট্টা ২০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

স’ মিলটিতে খাইট্টা বানানোর কাজ করা জাহিদ জানান, ‘মাংস কাটার খাইট্টা সব ধরনের কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায় না। টাঙ্গাইলে যে খাইট্টা পাওয়া যায় তার প্রায় সবই তেঁতুল কাঠ দিয়ে তৈরি। তেঁতুল কাঠ খুব শক্ত ও চিমটে। এতে সহজে কোপ বসে না। ফলে মাংস কাটতে কোনো সমস্যা হয় না।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রায় ৫ বছর ধরে এই স’ মিলে কাজ করছি। সচরাচর আমরা মাংস কাটার খাইট্টা তৈরি করি না।

তবে প্রতিবছর কোরবানীর ঈদ আসলেই এ কাজ করি। ইতোমধ্যে আমরা স’ মিল থেকে প্রায় ৫ থেকে ১০ হাজার পিসের বেশি বিক্রি করেছি। ঈদের আগে এখনও তিন দিন আছে। এ সময়ে আরও বেশি বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।

যুগধারা ডট টিভি/অন্তু