স্টাফ রিপোর্টার:
১৯৯৮ সালের ২৩ শে জুন টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর ওপর নির্মিত হওয়া বঙ্গবন্ধু সেতু ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২৩ জেলার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র প্রবেশদ্বার। সেতু দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১২ থেকে ১৩ হাজার ছোট-বড় যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। কিন্তু ঈদের সময়ে যানবাহনের চাপ বেড়ে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে যায়। এতে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে-এলেঙ্গা মহাসড়কটির ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ২ লেন থাকায় চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও চালকরা। গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৪ লেনের সুবিধা থাকলেও এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার ২ লেন থাকায় ঈদের সময়ে সড়কটি যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। ঘটে প্রাণহানি, হয় আহত। দীর্ঘ দিনের এমন সীমাহীন ভোগান্তি ও দুর্ভোগের পর মহাসড়কের ১৩ কিলোমিটার চার লেনের কাজ শুরু করেছে আব্দুল মোনেম লিমিটেড নামে একটি দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এক বছর আগে এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতু ১৩ কিলোমিটার মহাসড়কটির দক্ষিণ পাশে বিভিন্ন স্থানে বালু (মাটি) ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। প্রকৌশলীরা করছে সার্ভে। আবার ভেকু দিয়ে প্রশস্তকরণের কাজ করছে শ্রমিকরা। তবে জোরেসরে কাজের অগ্রগতি লক্ষ্যে করা যায়নি। এখন পর্যন্ত মহাসড়কের মাত্র একভাগ কাজ শেষ হয়েছে। মহাসড়কে চলাচলরত যাত্রী, চালক ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিনের ভোগান্তি ও দুর্ভোগ শেষে কাজ শুরু হয়েছে। মহাসড়কের পাশে বালু মাটি ফেলা হচ্ছে। কিন্তু কাজের তেমন গতি দেখতে নেই। সব মিলিয়ে কচ্ছপের গতিতে কাজ চলছে। এ দুই লেনের চলমান কাজ শেষ হলে আমাদের ভোগান্তি থাকবে না। ভোগান্তি কমাতে চলমান কাজ দ্রæত সময়ের মধ্যে শেষ করার দাবি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্প ফেইজ ২ এর অধীনে এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পে ১৩.৬ কিলোমিটার মহাসড়কে ১টি ফ্লাইওভার, ৮টি ব্রিজ, ১০টি কালভার্ট ও ২টি আন্ডারপাসসহ একটি সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হবে। প্রায় ৬০১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ লেনসহ এসএমভিটি (সার্ভিস লেন) করার উদ্যোগ নিয়েছেন। প্যাকেজ- ৫ এর অধীন এ কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর থেকে উত্তরবঙ্গের ১৭টিসহ মোট ২৩টি জেলার যানবাহন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে চলাচল শুরু হয়। এতে করে মহাসড়কে গাড়ির চাপ ব্যাপক বেড়ে যায়। গাড়ির তুলনায় মহাসড়কটি সম্প্রসারণ না থাকায় প্রতিদিনই যানজটসহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ দিতে হয় যাত্রী ও চালকদের। তাই ভোগান্তি কমাতে সরকার সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প হাতে নেয়। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু সেতু (বিবিএ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী ও এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, ২০২১ সালে ঠিকাদারাী প্রতিষ্ঠানকে ৩ বছরের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে বালু মাটি ফেলার কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ে মহাসড়কের চার লেনের কাজ শেষ হবে।