আপিল নামঞ্জুর, প্রার্থী হতে পারছেন না জাহাঙ্গীর

Spread the love

যুগধারা ডেস্ক :

আপিলেও মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পাননি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আলোচিত মেয়র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম। রিটার্নিং কর্মকর্তার বাতিলের পর আপিলেও সেই আদেশ বহাল রেখেছে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) বিকেলে আপিলের শুনানি শেষে বাতিলের আদেশ দিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধি ও সিটি নির্বাচনে মিডিয়ার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মঞ্জুর হোসেন খান বলেন, মঙ্গলবার বাছাইয়ে বাদ পড়া মোট সাত প্রার্থী আপিল করেন।

এদের মধ্যে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম, একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও পাঁচজন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। আপিলের শুনানিতে দুজন আইনজীবীসহ জাহাঙ্গীর আলম নিজে উপস্থিত ছিলেন। তারা পুনরায় তফসিলিকরণের জন্য টাকা জমা দেওয়া এবং জামিনদার খেলাপি হয় না বলে দাবি করেন।

কিন্তু শুনানিতে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি জানান, আপিলকারী গণ ব্যাংকের আইন অনুযায়ী এখনো ঋণ খেলাপি। জাহাঙ্গীর আলম যে প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার সে ঋণ এখনো পুনরায় তফসিলিকরণ হয়নি।

পরে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় ঋণ খেলাপি ছিলেন। তাই তারা পরে টাকা জমা দিলেও তারা খেলাপি।

মঞ্জুর হোসেন আরো বলেন, উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আপিলকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমসহ ঋণ খেলাপির কারণে মনোনয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন। তবে কাউন্সিলর পদে মোহাম্মদ আলী নামে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের এক প্রার্থীর টাকা জমার রশিদে কোড নম্বর ভুল থাকায় বাতিল হওয়া মনোনয়নটি বৈধ ঘোষণা করেন।

এর আগে গত ৩০ এপ্রিল গাজীপুরের রিটার্নিং অফিসার ফরিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। ওই সময় রিটার্নিং অফিসার জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী জাহাঙ্গীর আলম যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠানটি ঋণ খেলাপি হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হলো।

পরে সেদিনই উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার কথা জানিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমি নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি- যেহেতু আপনারা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ডেকেছেন, ব্যাংক তাদের লিখিত জবানবন্দি দিয়েছে। কিন্তু আপনারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নির্বাচনকে নিরপেক্ষ প্রমাণ করে না।

ওই সময় মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও অভিযোগ তুলেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। পরে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কার্যালয়ের বিভাগীয় অফিসে আপিল করেন তিনি।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। একই পদে প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়েদা খাতুনকেও দাঁড় করিয়েছেন। সবশেষ ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষদিনে জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা বাতিল হয়। অবশ্য ওইদিন তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার।

সবমিলিয়ে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের শেষদিনে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন, গনফ্রন্ট আতিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল, স্বতন্ত্র হারুন অর রশিদ, স্বতন্ত্র সরকার শাহানুর ইসলাম রনি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন, জাকের পার্টির রাজু আহমেদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

যুগধারা ডট টিভি/অন্তু