স্টাফ রিপোর্টার ঃ শীতার্তরা তুলে নিলেন যার যার কম্বল। একে একে এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন বয়সের শীতার্ত মানুষেরা, একটা করে কম্বল তুলে নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন যার যার ঘরে।
গত (বৃহস্পতিবার) সকালে গাজীপুর সদর উপজেলার কচি-কাঁচা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৪শ’ কম্বল গ্রহণ করেন বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা।
শিশুদের জন্যে আলাদা ধরনের স্কুল কচি-কাঁচা একাডেমিতে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ত্রয়োদশ বার্ষিকীর দিনে ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির উদ্যোগে শীতার্তদের জন্য সামান্য উপহারের ব্যবস্থা করা হয়। সোসাইটির সভাপতি প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, “শিক্ষক-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে আমরা চার শতাধিক কম্বলের ব্যবস্থা করেছি, আমরা বিশ্বাস করি এই শীতবস্ত্রগুলো আপনাদের, আমরা আমানত হিসেবে রেখেছিলাম। কেউ এগুলো আপনাদের হাতে তুলে দেবে আর আপনারা হাত পেতে নেবেন আমরা এটাতে বিশ্বাসই করিনা। আপনাদের জিনিস আপনারাই নিজ হাতে তুলে নিবেন।”
মানুষকে কিছু দিলে সম্মানের সঙ্গেও দেয়া যায় এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “হয়তো জীবনের নানা প্রতিকূলতার কারণে আজকে অসচ্ছল মানুষেরা শীতবস্ত্র নিতে এসেছেন। আমরাও হয়তো শীতবস্ত্র গ্রহণকারী হতে পারতাম, একথা আমরা সবসময় মাথায় রাখি।”
সকালে জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা, শিশু-সংগঠক ও সাংবাদিক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও কচি-কাঁচা একাডেমির সহকারী শিক্ষক মাকসুদা খাতুন লিপির সঞ্চালনায় বিদ্যালয়ের রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই মিলনায়তনে ‘কোন বাধাই আমাদের অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবেনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক, কচি-কাঁচা একাডেমির প্রধান শিক্ষক আফরোজা খানম, নয়নপুর এন এস আদর্শ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শেফালী বেগম, প্রাক্তন কচি-কাঁচা ফোরামের সভাপতি ডা. সোহানা সরকার, প্রাক্তন কচি-কাঁচা ফোরামের সাবেক অর্থ সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর এবং পরিবারের পক্ষ থেকে জনাব মিঠুন সিদ্দিকী। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার ইফতি ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আদিনা সোমনা তাসফিয়া।
আলাচোনা সভাশেষে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহিফল। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সনের ৩০শে নভেম্বর গভীর রাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান কচি-কাঁচা একাডেমি ভস্মিভূত হয়ে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। অদ্যাবধি অগ্নিকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি।