আব্দুল লতিফ :
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে দাম ভালো পাওয়ায় শীতকালীন আগাম সবজি ও সবজির চারা বিক্রি করে লাভের আশা করছেন চাষীরা। একই জমিতে চারা তৈরি ও কয়েক প্রকার সবজি চাষ করার পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে অন্য ফসলের তুলনায় অধিক লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। এর ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে সবজি চাষের পরিমান। তবে কৃষি বিভাগ থেকে যথাযথ সেবা না পাওয়ার অভিযোগও অনেকের। আর কৃষি বিভাগ বলছে সঠিক পরামর্শ পাওয়ার ফলেই লাভবান হচ্ছে চাষীরা।
সবজির এলাকা খ্যাত টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের লোকেরপাড়া ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের পাঁচটিকড়ি, বীরসিংহ, বকশিয়া, আতাইলশিমুলসহ প্রায় গ্রামেই চাষ হচ্ছে শীতকালীন সবজি। একই জমিতে ফুলকপি, টমেটো, পাতা কপি, ধনিয়া পাতার পাশাপাশি চারা বিক্রিতেও লাভবান হচ্ছেন তারা। তবে কৃষি অফিসের সহযোগীতা না পাওয়ার অভিযোগ তাদের।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলে ১২ উপজেলায় চলতি মৌসুমে সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে। এতে ঘাটাইল উপজেলায় এবছর ১৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন এলাকায় মাঠে মাঠে শীতকালিন আগাম সবজি চাষের ধুম পড়েছে। মাঠে সবজি খেত পরিচর্য্যয় ব্যস্ত কৃষকরা। অনেকেই শীতকালিন সবজির চারা রোপনেও ব্যস্ত। গত বছরের তুলনায় এবছর সবজির দাম বেশি। ভাল দাম পাওয়ায় সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। প্রথম দিকে আবহাওয়া অনূকুলে না থাকলেও বর্তমানে আবহাওয়া কৃষকদের অনূকুলে রয়েছে। চাহিদার বেড়েছে। এতে বাড়তি দামে সবজি বিক্রি করতে পারায় লাভবান হচ্ছেন এ জেলার কৃষকরা। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে হরেক রকমের সবজির।
পাঁচটিকড়ি গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান ২৮ শতাংশ জমিতে ফুল কপির পাশাপাশি মরিচ ও টমেটোর চারা রোপন করেছেন। ইতোমধ্যে আগাম সবজি ফুলকপি ও টমেটো, মরিচ এবং ফুলকপির চারা বিক্রি করেছেন লাখ টাকা।
মতিয়ার রহমান বলেন, শীত থাকলে সবজি ভাল দামে বিক্রি করতে পারবো। এবছর সবজির দাম বেশি। ইতোমধ্যে চারা ও সবজি বিক্রি করে ভাল টাকা উপার্জন হয়েছে। খেতে এখন ফুলকপি ফুটেছে। আশা করি ভাল দাম পাবো। ২৮ শতাংশ জমিতে সবজি চাষে খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। সাথে নিজেও কাজ করেছি। এখন পর্যন্ত লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে চারা ও সবজি।
আরেক রিপন বলেন, সবটুকু জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। সামনে শীত থাকলে দাম ভাল পাওয়া যাবে। পড়াশুনার পাশাপাশি নিজ জমিতে কৃষি কাজ করছি। তবে কৃষক বিভাগ থেকে তেমন সহযোগিতা বা পরামর্শ পাওয়া যায় না। তারা মাঠে আসেন না। আমাদের যেতে বলা হয় অফিসে।
ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন কৃষকদের জন্য। নিয়মিতভাবে কৃষি কাজে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। একটি বøকে ৫শ কৃষক থাকেন। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কৃষি সেবা দেয়া সম্ভব না। তারপরও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কৃষি সেবা প্রদানের জন্য উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হবে।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন বলেন, সবজির বাজার মূল্য ও ফলনভালো থাকায় ভালো দাম পাচ্ছে কৃষকরা। দিন দিন সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছে তারা। গত বছরের চেয়ে এবছর লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশি অর্জিত হবে।