বাঙালির প্রাণের মেলা একুশে বইমেলা

Spread the love

যুগধারা ডেস্ক :

চলছে বাঙালির প্রাণের মেলা-একুশে বইমেলা ২০২৩। আজ শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মেলায় ছিল প্রথম শিশুপ্রহর। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়ে শিশুরা তাদের অভিভাবকদের হাত ধরে এসেছিল মেলায়। ঘুরে দেখেছে মেলা প্রাঙ্গণ, কিনেছে বই। 

প্রতিবছরই একুশে বইমেলায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার পালন করা হয় শিশুপ্রহর। এই সময়ে শুধু শিশুরা ও তাদের অভিভাবকরা মেলায় প্রবেশ করতে পারেন।   

একুশে বইমেলায় শিশুদের মূল আকর্ষণ এই শিশুপ্রহর। শিশুদের বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলতেই মেলার একটি অংশকে ঘোষণা করা হয় শিশুপ্রহর হিসেবে। 

শিশুপ্রহর উপলক্ষে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণের শিশুচত্বর নান্দনিকভাবে সাজানো হয়।  

শিশুচত্বরের স্টলগুলোতে শিশুদের জন্য রাখা হয় বই। সেখানে চলন্তিকা বইঘর, শিশু প্রকাশ, শৈশব, চিলড্রেনস বুক, সিসিমপুর ইত্যাদি স্টল রয়েছে, যেগুলোতে রয়েছে শিশুদের বই।  

এই আয়োজনে বরাবরই শিশুদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় সিসিমপুরের চরিত্রগুলো। তবে এবার শিশুদের আনন্দ দিতে স্টেজে হালুম, ইকরি ও টুকটুকির দেখা মেলেনি। তাই বই দেখেই আনন্দ নিয়েছে শিশুরা।

মেলায় আসা নাজাম জানায়, অনেক বই। সব বই-ই কিনতে ইচ্ছে করে। কিন্তু বাবা বলেছেন দেখেশুনে বই কিনে দেবে। আমি ঘুরে ঘুরে দেখেছি। কমিকস আমার খুব ভালো লাগে। বেশ কিছু কমিকস কিনেছি। এছাড়া বিজ্ঞানের বইও আমার খুব প্রিয়। 

শিশুতোষ প্রকাশনা সংস্থা বাবুই-এর প্রকাশক কাদের বাবু বলেন, শিশুচত্বর এখনও সম্পূর্ণ করা হয়নি। কিছু কাজ বাকি আছে। ছুটির দিনে শিশুরা আসছে, বই দেখছে। আশা করি এবার একটি সুন্দর মেলা হবে।

শিশুচত্বর ছাড়াও ছুটির দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাঠক-দর্শনার্থীদের আনাগোনা ছিল ভালোই। সকাল থেকেই পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন অনেকে। প্রকাশকেরা আশা করছেন, ছুটির দিনের মেলা জমে উঠবে।

এদিকে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই মেলায় সব বয়সী মানুষের ভিড় আস্তে আস্তে বাড়ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনেক স্টল-প্যাভিলিয়নের কাজ এখনো চলছে। এর মধ্যেই পাঠক-দর্শনার্থীরা মেলা ঘুরে দেখছেন, বই কিনছেন। 

মেলায় আসা আশরিফা বলেন, করোনার কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালের মেলায় আসিনি। এবার মেলায় এসে ভালো লাগছে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতেই ভালো লাগে বেশি। 

তিনি আরো বলেন, মেলার সুবিধা হলো এক জায়গায় দেখেশুনে পছন্দমতো বই কেনা যায়। এতে আমার মতো যারা বিচিত্র বিষয়ে আগ্রহে তাদের জন্য ভালো সুযোগ তৈরি হয়।

এ দিকে এবার মেলায় আসা অনেক বইয়ের দাম তুলনামূলক বেশি বলে জানিয়েছেন পাঠকরা। এ বিষয়ে প্রকাশকদের ভাষ্য, বৈশ্বিকসহ নানা কারণে এখন কাগজসহ অন্যান্য ছাপা-সম্পর্কিত বস্তুর দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচও বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই বইয়ের দাম বাড়াতে হয়েছে।

তারা আরো বলেন, পাঠক কম দামে বই হাতে নিতে পারুক – এটা আমরাও চাই। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতিতে সেটা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না। কারণ আমাদেরও তো বাঁচতে হবে। তাই বাধ্য হয়েই বইয়ের মূল্য বৃদ্ধির পথে হাঁটতে হচ্ছে আমাদের। 

প্রসঙ্গত, গত ১ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৩ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই মেলা চলবে পুরো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে।