যুগধারা ডেস্ক :
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৩তম জন্মদিন আজ। ১৯৩০ সালের ২০ মার্চ কুড়িগ্রাম শহরের ‘লাল দালান’ বাড়িখ্যাত নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় পার্টি থেকে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার (২০ মার্চ) বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল চত্বরে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মুহাম্মদ কাদের।
এইচ এম এরশাদ ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান ১৯৫২ সালে। তিনি ১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে হটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেন।
১৯৮৬ সালে তার প্রতিষ্ঠিত দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি দেশে উপজেলা পদ্ধতি চালু করেন। বিরোধী দলগুলোর লাগাতার গণআন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন। এরপর গ্রেপ্তার হয়ে ৬ বছর কারারুদ্ধ থাকেন।
তবে তিনি ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি পান। কারাগারে থাকাকালীন ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ৫টি করে আসনে প্রার্থী হয়ে প্রতিটিতে জয়ী হন এরশাদ। জেলে থেকে নির্বাচনের এমন বিজয় সাফল্যের নজিরও নেই ইতিহাসে। কোনো নির্বাচনে না হারার রেকর্ডও আছে তার। এরশাদের হাতে গড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি বর্তমান সংসদে প্রধান বিরোধীদল। দশম জাতীয় সংসদেও প্রধান বিরোধীদল ছিল জাতীয় পার্টি।
১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অনন্য রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয় জাতীয় পার্টি। তৃতীয় ও চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। এরপর থেকে প্রতিটি সংসদেই প্রতিনিধিত্ব ছিল জাতীয় পার্টির। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদের নির্বাচনের পর সরকার গঠনে জাতীয় পার্টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এছাড়া প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের পরে সরকার গঠনেও জাতীয় পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবে সুবিধাবাদী রাজনীতির কারণে কয়েক দফায় বড় ধরনের ভাঙনের মুখে পড়ে দলটি। তবে জীবন দশায় দলের দায়িত্ব ছোট ভাই জিএম কাদেরের হাতে তুলে দেন।
তিনি ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। নানা ধারায় বিভক্ত জাতীয় পার্টির মূলধারা এরশাদের নামে পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । স্বাস্থ্য, সাহিত্য, কৃষি, সঙ্গীত, শিক্ষা, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া ও শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ৮ বিশিষ্টজনকে পল্লীবন্ধু পদক প্রদান করা বিগত ২০২১ সালে।
দলটির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী বুধবার রাজধানীর কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এতে পার্টির সিনিয়র নেতারা ছাড়াও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ এরশাদের স্মৃতিচারণ করবেন।
এদিকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন স্মরণে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জাতীয় পার্টি ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট। এ উপলক্ষে দেশের সব জেলা উপজেলা, মহানগর ও পৌর কমিটিগুলোকে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর দরবারে পল্লীবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত চেয়ে দোয়ার আয়োজন করার অনুরোধ করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ।
রোববার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের অস্থায়ী কার্যালয়ে পল্লীবন্ধুর জন্মদিন পালনে করণীয় শিরোনামে এক জরুরি সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। এদিকে কেন্দ্রীয় ভাবে গুলশানে বিরোধীদলীয় নেতার বাসভবনে দোয়ার আয়োজন ও কেক কেটে এরশাদের জন্মদিন উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যুগধারা ডট টিভি/অন্তু