যুগধারা ডেস্ক :
গত ছয় মাসে শারীরিক-মানসিকসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক হাজার ৫২০ নারী ও কন্যাশিশু। এদের মধ্যে ২২৩ জন কন্যাশিশুসহ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩২৬ জন। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৬০ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২১ কন্যাশিশুকে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পরিসংখ্যানে বলা হয়, শুধু গত জুন মাসেই ২৬৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩৩ জন শিশুসহ ৫৩ জন নারী। এদের মধ্যে ৫ শিশুসহ ১৩ জনকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। আর ধর্ষণ শেষে হত্যা করা হয়েছে ৩ জনকে।
এতে বলা হয়, এ ছাড়া ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪৮ হাজার ৭৯২ জন নারী ও কন্যাশিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৯ হাজার ৮৫০ জন।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এই সকল মামলার আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের ভয়াবহতা দিন দিন বেড়েই চলছে। এ ছাড়া অনেক ঘটনাই অপ্রকাশিত থেকে যায়।
নারী ও শিশু অধিকারকর্মী আইনজীবী সুরাইয়া পারভীন বলেন, নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলায় ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমার আইন থাকলেও তা মানা হয় না। এমনকি অনেক পাবলিক প্রসিকিউটরও উদাসীন দেখান। থানা পুলিশ এবং বিচার প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগীকেই নানানভাবে দোষারোপ করা হয়। ফলে ভুক্তভোগীর পরিবারের চাপেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়। তাই বেশিরভাগ সহিংসতার ঘটনা অপ্রকাশিত থেকে যায়।
মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, যথাযথ আইনের অভাবে অপরাধীকে শাস্তি প্রদান ও সহিংসতার শিকার নারীরা ন্যায়বিচার পান না। তাই আইন সংস্কার জরুরি।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা-নারীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম প্রতিবন্ধক। নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব পরিবর্তনের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে হবে। নারী নির্যাতন রোধে নতুন আইন প্রণয়ন ও পুরাতন আইন পর্যালোচনা করতে হবে। ভুক্তভোগীদের সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে।